এখনও অতি বিপজ্জনক দিল্লির বাতাস

কেন্দ্রীয় দুষণ পর্ষদের রিপাের্ট অনুযায়ী, গত সাত দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার রেকর্ড জায়গায় পৌঁছে গেছে রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতি।

Written by SNS New Delhi | December 13, 2019 2:01 pm

দমবন্ধ পরিস্থিতি। চোখের সামনে ঝাপসা আকাশ। ধোঁয়াশায় ঢেকেছে চারদিক। দৃশ্যমানতা কমছে হু হু করে। গত সাতদিনে আরও ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছেছে দিল্লির দুষণ। প্রাণ ওষ্ঠাগত বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ বাতাসের গুণগত মানের সুচক (একিউআই-এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল ৪০৭। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে একিউআই-ও, যা বিপজ্জনক থেকে অতি বিপজ্জনকের জায়গায় পৌঁছে গেছে।

কেন্দ্রীয় দুষণ পর্ষদের রিপাের্ট অনুযায়ী, গত সাত দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার রেকর্ড জায়গায় পৌঁছে গেছে রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতি। এন-৯৫ বা পি-১০০ মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরােতে নিষেধ করা হয়েছে বাসিন্দাদের। জাতীয় রাজধানী এলাকায় এদিনের একিউআই-৪০৭। গাজিয়াবাদের পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। সেখানে বাতাসের গুণগত মানের সুচক ৪৭০। গ্রেটার নয়ডায় একিউআই ৪২২, ফরিদাবাদে ৩৯৮, অশােক বিহারে ৪৪৬, আর কে পুরমে ৩৯৯, দিল্লি ইউনিভার্সিটি নর্থ ক্যাম্পাসে ৪৪৬।

এনভায়রনমেন্ট পলিউশন কন্ট্রোল অথরিটি (ইপিসিএ) জানিয়েছে, দিওয়ালির পর থেকেই রাজধানীতে দুষণ সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়েছে। আতসবাজির ধোঁয়া, পার্শ্ববর্তী দুইরাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার শস্যের গােড়া পােড়ানাে, গাড়ি ও কলকারখানার ধোঁয়ায় ডেরবার দিল্লি ও তার সংলগ্ন এলাকা। এয়ার কোয়ালিটি মনিটর করার সরকারি সংগঠন ‘সফর’ জানিয়েছে, বাতাসের গুণগত মানের সুচক বা একিউআই ৩০১-৪০০’র মধ্যে থাকলে তাকে বলে ‘ভেরি পুওর’ আর ৪০০ ছাড়িয়ে গেলে সেটাই হয়ে ওঠে ‘সিভিয়ার’ বা অতি বিপজ্জনক।

পরিসংখ্যান বলছে, এ বছর দূষণের মাত্রাটা অন্যান্য বারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। দূষণে জেরবার দিল্লির লাগােয়া এলাকায় চাষের জমিতে খড় পােড়ানাে নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিল এনভায়রনমেন্ট পলিউশন কন্ট্রোল অথরিটি (ইপিসিএ)।

গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে দুষণ মামলার শুনানিতে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি সরকারের প্রতিনিধিদের বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও দীপক গুপ্তর বেঞ্চ জানায়, কোনও রাজ্য থেকে ফসলের গােড়া পােড়ানাের খবর পাওয়া গেলে সেই রাজ্যের মুখ্যসচিব থেকে যে গ্রামে তা পােড়ানাে হচ্ছে তার পঞ্চায়েত প্রধান- সকলকেই জবাবদিহি করতে হবে।

বেলাগাম দুষণে জেরবার দিল্লিবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিতে রাজধানীতে কয়েক বছর ধরেই চলছে গাড়ির জোড়-বিজোড় ফমুর্লা। দুষণ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গেলে এক দিন জোড় সংখ্যার গাড়ি এবং পরের দিন বিজোড় সংখ্যার গাড়ি রাস্তায় নামার অনুমতি মেলে। কিন্তু সেই ফর্মুলায় যে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি, সেটাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। পাঞ্জাব, হরিয়ানায় খড় পােড়ানাের বড় ভূমিকা রয়েছে দিল্লির দূষণে। সেটা বন্ধেও এদিন কড়া নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।