অবাক কান্ড! বাইরে ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি পড়ছে! আর স্কুলের ভিতরে ভরা ক্লাসরুমে পাঠদান করছেন শিক্ষিকা। ক্ষুদে ছাত্রছাত্রীরা মনোযোগী হয়ে শিক্ষিকার পড়া শুনছেন। মাথার ওপর একটা ছাদও রয়েছে। তা সত্ত্বেও ক্ষুদে ছাত্রছাত্রীদের মাথায় রয়েছে ছাতা। আর সেই ছাতা থেকে মেঝেতে গড়িয়ে পড়ছে বৃষ্টি। জল থই থই ক্লাস রুম। কারণ স্কুলের ছাদ থাকলেও সেই ছাদ যে ফুটো! তাতে জল মানায় না। অথচ তার মধ্যেই মনোযোগী হয়ে ক্লাস করছেন ছোট্ট ছাত্রছাত্রীরা। আজব এই ঘটনা যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। ইতিমধ্যে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। বিষয়টি সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। যে রাজ্যে বিপুল অর্থব্যয়ে দেবতার মন্দির নির্মাণ হয়, সেখানে শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনও হেলদোল নেই। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে নেটপাড়ার নাগরিকরা।
জানা গিয়েছে, এই নিতান্ত দৈন্য দশায় থাকা এই স্কুলটি উত্তরপ্রদেশের বাগপৎ জেলার রটৌলে অবস্থিত। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টির মধ্যেও ছাতা মাথায় ক্লাসে ক্ষুদেরা মনোযোগী হয়ে শিক্ষিকার পড়া শুনছে। তাদের মাথার ওপরে রাখা সেই ছাতার ওপর দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। এদিকে ছাদ ফেটে চৌচির। যেকোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় কোনও দুর্ঘটনা। যেকোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে স্কুলের ছাদ। বিপদ নিমেষে কেড়ে নিতে পারে ওইটুকু দুধের শিশুদের অমূল্য প্রাণ। যারা আমাদের দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
তাহলে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ টাকাগুলো যাচ্ছে কোথায়? সেজন্য অভিযোগ উঠছে, উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক স্কুলের দুর্নীতি নিয়েও। নেটিজেনরা অভিযোগ করছেন, মুখে শুধু উন্নয়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে কোনও কাজই হয়না। তাহলে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর কী করছে? আবার কেউ অভিযোগ করেছেন ওই ছাদ সারাইয়ের টাকা হয়তো কোনও নেতা লোপাট করেছে। সেজন্য স্কুল মেরামত হয়নি। ওইটুকু কচি শিশুদের এভাবেই ছাতা মাথায় দিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে।
এদিকে প্রধান শিক্ষিকা অভিযোগ করেছেন, স্কুলের এই বেহাল দশা নিয়ে বহুবার অভিযোগ জানালেও দীর্ঘদিন ধরে কোনও সুরাহা হচ্ছে না। এব্যাপারে বহুবার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের জানিয়েও লাভ হয়নি বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষিকা। অথচ স্কুল হয়ে আছে মরণফাঁদ। তবুও বাধ্যতামূলকভাবে এই অস্বাস্থ্যকর ও বিপদজনক পরিবেশে ক্লাস নিতে হচ্ছে।