শিবসেনা বিজেপি সম্পর্কের গতিপথ নিয়ে যখন রাজনৈতিক মহলে জোরদার আলােচনা চলছে ঠিক তখনই জোট সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পরােক্ষে বার্তা দিয়ে শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরের প্রয়াণ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হাজির থাকলেন বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ।
মুখ্যমন্ত্রী পদের সমানাধিকারে দাবিতে অনড় শিবসেনার দাবি খারিজ করে দেওয়ার পর দুই শরিকের সম্পর্কে চিড় ধরে। বিজেপি ও শিবসেনা জোট ১৬৬টি আসন পেয়েছে। শিবাজি পার্কে আয়ােজিত বাল ঠাকরের প্রয়াণ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উদ্ধব ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে সহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। যদিও উদ্ধব ও আদিত্য পার্ক থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর দেবেন্দ্র ফড়নবিশ উপস্থিত হন। তিনি বালা সাহেব ঠাকরের সম্মানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বেড়িয়ে যান। ফড়নবিশকে পার্কে ঢুকতে দেখে সৈনিকরা স্লোগান দেন ‘কার সরকার, শিবসেনার সরকার’।
Advertisement
ফড়নবিশ টুইট করে শিবসেনা সুপ্রিমাে বালা সাহেব ঠাকরের প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে লিখেছিলেন, ‘আমাদের শ্রদ্ধেয় বালা সাহেব ঠাকরের প্রয়াণ দিবসে স্যালুট জানাই’। ভারতীয় জনতা পার্টি নেতা বিনােদ তাওড়ে, পঙ্কজ মুন্ডে সহ কংগ্রেস ও এনসিপি নেতারাও হাজির ছিলেন।
Advertisement
মহারাষ্ট্রে ভােটের ফল প্রকাশের পরের দিন থেকে সরকার গঠনের প্রশ্নে শরিক জোট সম্মত থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী পদের সমানাধিকারের দাবিতে শিবসেনা সরব হয়। গােড়ায় তাদের দাবির কোনও ভিত্তি নেই বলে ভারতীয় জনতা পার্টি দাবি করলেও পরে তারা জানায়, প্রাক লােকসভা ভোট অমিত শাহের সঙ্গে উদ্ধব ঠাকরের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ৫০-৫০ ফর্মুলা নিয়ে কথা হয়েছিল, কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। ফলে সম্পর্কে চিড় ধরে। দিন যত এগিয়েছে সম্পর্ক তত খারাপ হয়েছে, শিবসেনা একটা সময়ে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
সম্প্রতি দলীয় মুখপত্র সামানাতে বিজেপি’কে রাষ্ট্রপতি শাসনের আড়ালে ঘােড়া কেনাবেচার অভিযােগে শিবসেনা কাঠগড়ায় তুলেছে। কেন্দ্রের মােদি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট থেকে শিবসেনা সরে দাড়ানাের পর রাজ্যসভাতেও আসন নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিবসেনা লক্ষণীয়ভাবে বিরােধী আসনে বসেছে। পাশাপাশি এনডিএ বৈঠকে শিবসেনা দলের প্রতিনিধিরা গরহাজির ছিলেন। সেনার তরফে বলা হয়, রাজ্যপালের কাছে যারা ক’দিন আগে পর্যাপ্ত সমর্থন না থাকায় সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে, তারা হঠাৎ করে কিভাবে দাবি করে যে তারা সরকার গঠন করতে পারবে।
ভারতীয় জনতা পার্টি ১০৫টা আসন পেয়েছে। ঘােড়া কেনাবেচার প্রক্রিয়া ক্রমশ প্রকাশ্য। স্বচ্ছতা বজায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কর্তাদের মুখােশ খুলে গেছে। মহারাষ্ট্র বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত পাটিল বলেন, ১১৯ জন বিধায়কের সমর্থনে বিজেপি খুব শীঘ্র সরকার গঠন করবে। সামনাতে বলা হয়, খেলা হােক আর রাজনীতি সন্দেহ তাে সব জায়গায় থাকে। কোনও দল একক ভাবে ও জোট করে সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হওয়ার কথা রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি রাষ্ট্রপতিকে জানানাের পর তিনি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেছেন। এদিকে, শিবসেনা কংগ্রেস ও এনসিপি’র সঙ্গে জোট করে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের লক্ষ্যে সওয়ার হয়েছে।
এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার মহারাষ্ট্রে অ-বিজেপি সরকার গঠনের লক্ষ্যে শিবসেনা ও কংগ্রেসকে রাজি করানাের যজ্ঞে নেমেছেন। তিনি বলেন, ঠাকরে একজন মারাঠি ছিলেন, যিনি মারাঠিদের স্বার্থরক্ষার্থে সােচ্চার হয়েছে। সামাজিক কারণে রাজনীতি করেছেন অসাধারণ বক্তা ছিলেন, অনুগামীদের চোখে তিনি মহামানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁর প্রয়াণ দিবসে আমরা তাঁকে সম্মান জানাই।
Advertisement



