লোকসভা ভোট প্রত্যক্ষ করতে বিশ্বের ২৫ টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ বিজেপির

Written by SNS April 10, 2024 8:51 pm

 দ্য ওয়াল ব্যুরো:  ভারতের নির্বাচন প্রত্যক্ষ করতে সারা বিশ্বের ২৫ টি প্রথম সারির রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি। বিদেশি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার খুঁটিনাটি দেখার ব্যবস্থা করেছে গেরুয়া শিবির। বিদেশি নেতাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্বাচনী সভাতেও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী ১৯ এপ্রিল সাত দফার ভোটের প্রথম পর্ব শুরু হবে।  সূত্রের খবর, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সম্প্রতি দিল্লিতে ৮০ জন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

বাংলাদেশের শুধুমাত্র শাসক দল আওয়ামী লিগকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। বিরোধী দল বিএনপি-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাককে পরোক্ষে সমর্থনের পাশাপাশি সে দেশে ভারত বিরোধিতায় মুখর বিরোধী দলটি। সেই কারণেই বিএনপি-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে বিজেপির এক নেতা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, নেপালের মাওবাদী-সহ প্রথমসারির সব স্বীকৃত দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বিজেপি সূত্রের খবর,যে সব দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে  দেশেরই শাসক ও প্রধান বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে আমন্ত্রণ পায়নি চিন ও পাকিস্তানের কোনও দল। বস্তুত ওই দুই দেশকে এই ব্যাপারে বয়কট করেছে বিজেপি।

চিনা কমিউনিস্ট পার্টিকে বিজেপি অতীতে তাদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আবার ভারতে বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপিও ডাক পেয়েছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে। তবে এবারও ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি -সহ বিজেপি নেতাদের ভাষণে ঘুরে ফিরে আসছে চিন ও পাকিস্তানের সমালোচনা। মঙ্গলবারই অরুণাচলের সভা থেকে চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক সভায় মুখ খুলেছেন মোদি ।

প্রশ্ন হল, বিজেপি কেন এবার নির্বাচনে এতগুলি বিদেশি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিল। ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, কেজরিওয়ালকে নিয়ে চাপান-উতোর, ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে বিরোধী দলগুলির সমালোচনা, সংখ্যালঘুদের নিয়ে দেশি-বিদেশি সংস্থার রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে পদ্ম শিবির দেখাতে চাইছে,  ভারত এখন অতীতের অন্ধকার কাটিয়ে উঠে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। 

কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুলেছে জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কানাডা, আমেরিকার পর পাকিস্তানও অভিযোগ তুলেছে ভারতীয় এজেন্টরা তাদের দেশে ঢুকে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। বিজেপি মনে করছে, ভাবমূর্তি বদল নির্বাচন অন্যতম অস্ত্র হতে পারে। কারণ, এত বড় নির্বাচনী আয়োজন বিশ্বের অন্য কোনও দেশে নেই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গোটা বিশ্বের কাছে ভারতকে গণতন্ত্রের মাতৃভূমি হিসাবে তুলে ধরেন। অন্যদিকে, বিদেশ সফরে গিয়ে রাহুল গান্ধি অভিযোগ করেন,  সেই মাতৃভূমি ভারতে আজ গণতন্ত্র সব থেকে বেশি বিপন্ন। শুধু শাসক ও বিরোধী দলই নয়, নাগরিক সমাজও মোদি সরকারের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ নিয়ে  সরব। এমনকি মোদি সরকার সংবিধান বদলে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে নানা মহলে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের ২৫টি প্রথম সারির দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে  বিজেপি নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া।