বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের গাড়ির কনভয়ে ধাক্কা মারল ট্রাক। শুক্রবার গভীর রাতের এই ঘটনা ঘিরে বিহারে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ বিহারের হাজিপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে তেজস্বীর অভিযোগ, এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়, তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছিল। পাল্টা বিজেপি ও জেডিইউয়ের বক্তব্য, আরজেডি নেতারা ষড়যন্ত্রের কথা বলে মানুষের মন ভেজাতে চাইছেন। দুর্ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করে ভোটের বাজার গরম করতে চাইছেন। আরজেডি সূত্রে খবর, মধ্যরাতে তেজস্বী যাদবের কনভয়ে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে দ্রুতগতির একটি ট্রাক। ট্রাকের ধাক্কায় কনভয়ের একাধিক গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন গাড়ির চালক ও নিরাপত্তারক্ষী। যদিও তেজস্বী যাদব সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিহারের উত্তর প্রান্তের শহর মাধেপুরা থেকে অনুষ্ঠান সেরে ফিরছিলেন তেজস্বী। ২২ নম্বর জাতীয় সড়কের গোরাউলের কাছে চা খেতে নামেন। একটি ধাবায় দাঁড়িয়ে চায়ে চুমুক দিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় আচমকা একটি দ্রুত গতির ট্রাক তাঁর কনভয়ে থাকা তিন-চারটি গাড়িকে ধাক্কা মারে। তেজস্বীর গাড়ির চালক, পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টর এবং কনস্টেবল গুরুতর জখম হন। দুর্ঘটনার খবর মিলতেই সরাই থানার পুলিশ কর্মীরা অভিযুক্ত ট্রাক চালককে গ্রেপ্তার করে। ট্রাফিক আইন ভঙ্গের দায়ে মামলা হয়েছে চালকের বিরুদ্ধে। আহতদের হাজিপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের দেখতে হাসপাতালে যান তেজস্বী। আরজেডি বিধায়ক মুকেশ রোশন, বৈশালির সিভিল সার্জন ও আরজেডি-র কয়েকজন নেতা তেজস্বীর সঙ্গে ছিলেন।
তেজস্বী বলেন, ‘একটি কর্মসূচি শেষ করে আমরা মাধেপুরা থেকে ফিরছিলাম। একটা জায়গায় গাড়ি থামাই চা খাব বলে। তখনই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমার কনভয়ের দু’তিনটে গাড়িতে ধাক্কা মারে। আমার চোখের সামনেই ঘটেছে গোটা ব্যাপারটা। কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী দাঁড়িয়েছিলেন রাস্তার পাশে। তাঁদের মধ্যে তিন জন জখম হয়েছেন। আমার কাছ থেকে মাত্র পাঁচ ফুট দূরে দুর্ঘটনা হয়েছে। আর একটু এ দিক-ও দিক হলেই আমাদের ধাক্কা দিত ট্রাকটা।’
এই ঘটনাকে খুনের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করে বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ষড়যন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।’ যদিও কারা এই ষড়যন্ত্র করেছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি তেজস্বী। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আরজেডি বিধায়ক মুকেশ রোশন। পুলিশে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। মুকেশের দাবি, ‘পথ দুর্ঘটনার কারণেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ভারতে। ট্রাক চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কি না, তার তদন্ত হওয়া দরকার।’
তেজস্বী যাদবের বোন রোহিণী আচার্য ভাইয়ের কনভয়ের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন। লালু-কন্যার দাবি, এই গাফিলতি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। রোহিনী আচার্য এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘তেজস্বীর নিরাপত্তায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি গভীর উদ্বেগের বিষয়। এর দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত। কনভয়ের মধ্যে তেজস্বীর গাড়ি থেকে মাত্র পাঁচ ফুটের দূরত্বে ট্রাক কীভাবে পৌঁছল? এমন তো নয়, নিরাপত্তায় গাফিলতি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে?’ এদিকে এই ঘটনার পর তেজস্বী যাদব আরও কড়া নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন করেছেন।