ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে দেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা কমলেও জালিয়াতির অঙ্ক প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। উল্লেখযোগ্য হল, বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৬ হাজার ১৪ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক প্রতারণা হয়েছে দেশে। তার আগের অর্থবর্ষে এই সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতারণার অঙ্ক বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। কিন্তু প্রতারণার অঙ্ক বাড়লেও ব্যাঙ্ক প্রতারণার সংখ্যা ২০২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় কমেছে ২০২৫ অর্থবর্ষে। ২০২৪ অর্থবর্ষে প্রতারণার সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজার ৬০টি। ২০২৫ অর্থবর্ষে তা কমে হয়েছে ২৩ হাজার ৯৫৩।
২০২৪-২০২৫ অর্থবর্ষে ব্যাঙ্ক প্রতারণা সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্ক প্রতারণা সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা কমেছে। কিন্তু প্রতারণার অঙ্ক কয়েক গুণ বেড়েছে। এই বছর ৩৬ হাজার ১৪ কোটি টাকার যে ব্যাঙ্ক প্রতারণা হয়েছে, তার মধ্যে ২৫ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। ২০২৪ অর্থবর্ষে এই অঙ্ক ছিল ৯ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। তবে ব্যাঙ্ক প্রতারণার সংখ্যা দুই ধরনের ব্যাঙ্কেই কমেছে। ২০২৪ অর্থবর্ষে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে প্রতারণার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৪৬০টি। ২০২৫ অর্থবর্ষে তা কমে হয়েছে ৬ হাজার ৯৩৫। বেসরকারি ব্যাঙ্কেও প্রতারণার সংখ্যা ২৪ হাজার ২০৭ থেকে কমে হয়েছে ১৪ হাজার ২৩৩ টি।
আরবিআই জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক প্রতারণার যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশই ঘটেছে ডিজিটাল পেমেন্টস সংক্রান্ত অর্থাৎ কার্ড বা ইন্টারনেট সংক্রান্ত জালিয়াতির সংখ্যাই বেশি। এর পাশাপাশি লোন সংক্রান্ত জালিয়াতিও রয়েছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে মোট জালিয়াতির সিংহভাগই ডিজিটাল লেনদেন সংক্রান্ত জালিয়াতি। সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে জালিয়াতির বড় একটি অংশ হলো ঋণ সংক্রান্ত প্রতারণা।
ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে এর আগেও বহুবার সতর্ক করেছে আরবিআই। রিপোর্টে দাবি, গত আর্থিক বছরে ১ লক্ষ টাকার বেশি হওয়া ২৩ হাজার ৯৫৩টি জালিয়াতির প্রায় ৫৬.৫ শতাংশ হল কার্ড ও নেট সংক্রান্ত। বেসরকারি ব্যঙ্কগুলির ক্ষেত্রে এই ঘটনা বেশি, মোট জালিয়াতির ৬০ শতাংশ।
প্রতারণা রুখতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে আরবিআই। এই সমস্যা মোকাবিলায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলির জন্য ‘.bank.in’ এক্সক্লুসিভ ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করছে। এর লক্ষ্য সাইবার নিরাপত্তা, হুমকি এবং ফিশিংয়ের মতো ক্ষতিকারক কার্যকলাপ হ্রাস করা এবং সুরক্ষিত আর্থিক পরিষেবাগুলি সুগম করা, যার ফলে ডিজিটাল লেনদেনের উপর আস্থা বৃদ্ধি পায়।