২০১৯-২০ সালের বাজেটে সরকার যে পরিকল্পনাগুলি ঘােষণা করেছে, তা সবই বাস্তবসম্মত বলে বুধবার সংসদে মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ । এদিন বাজেট বিতর্কে তাঁর জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেটে কর বৃদ্ধির প্রস্তাবকে সমর্থন করে বলেন, দেশ গড়ার লক্ষ্যে এটা করদাতাদের একটি সামান্য অবদান।
গত ৫ জুলাই সংসদে বাজেট পেশ হওয়ার পর বাজেট নিয়ে বিতর্কে বলতে গিয়ে বিরােধী দলনেতারা বাজেটের সমালােচনাই করেছেন। সরকারের তরফে এই বাজেটকে আগামী পাঁচ বছরে ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের (পাঁচ লক্ষ কোটি ডলার) অর্থনীতিতে উন্নীত করার বাজেট বলা হয়েছিল।
Advertisement
কিন্তু কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি এই বাজেটকে ‘নতুন বােতলে পুরনাে মদ’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, সরকার নতুন ভারত গড়ার ডাক দিয়েছে কিন্তু বাজেটে না আছে কোনও নতুন পরিকল্পনা, না আছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযােগ বৃদ্ধির কোনও পথ। বাজেটে পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন, এর ফলে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।
Advertisement
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা বলেছেন, এই বাজেট গরিব, যুবক এবং কৃষকবিরােধী। কৃষকদের দুর্দশা কিংবা তার প্রতিকারের কোনও উল্লেখ নেই বাজেটে।
জবাবি ভাষণে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত আর্থিক বছরের তুলনায় সরকারের আয় বেড়েছে ৮০ হাজার কোটি এবং ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের তুলনায় এই আয় বেড়েছে ২ লক্ষ কোটি। এতেই প্রমাণিত হয় যে সরকার দেশের অর্থনীতির বিকাশ এবং উন্নয়ন সম্পর্কে বদ্ধপরিকর।
২০১৯-২০ সালের বাজেটে সরকার যে সব পরিকল্পনার কথা ঘােষণা করেছে সেগুলি বাস্তবায়িত করার পথে কোনও বাধা নেই কারণ পকিল্পনাগুলি সবই বাস্তবসম্মত। সরকার বাজেটে প্রতিরক্ষা, পেনশন, বেতন, প্রাতিষ্ঠানিক খরচ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করেছে। এর জন্য কর এবং কর বহির্ভূত আয়ের উৎসের উল্লেখ করা হয়েছে, যেখান থেকে এই খরচগুলি মেটানাে সম্ভব বলে মন্তব্য করেন নির্মলা সীতারমণ ।
তিনি জানান সরকার আর্থিক ব্যবস্থা এবং রাজস্বকে দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এর জন্য জনসাধারণের উন্নয়ন খাতে খরচের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। অর্থমন্ত্রীর দাবি, ২০১৯-২০ সালের বাজেটে কৃষি, সামাজির সুরক্ষা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিনিয়ােগের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রাও ৩.৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৩ শতাংশ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর মতে, অর্থনীতির বিকাশ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হল জাতীয় সুরক্ষা। ২০১৮-১৯ সালের তুলনায় ২০১৯-২০ সালে বাজেটের অন্তর্গত খরচ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩,৪৪,১৩৪ কোটি টাকা। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যাতে দেশে আরও বেশি করে বিনিয়ােগ আসে। অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, উন্নয়নের খরচ বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে, পাশাপাশি বেড়েছে সরকারি আয়ও।
অতি ধনীদের ক্ষেত্রে আয়করে সারচার্জ বৃদ্ধি নিয়ে নির্মলা সীতারমণ বলেন, দেশ গড়ার জন্য এটা খুবই সামান্য অবদান সরকার। ২০১৯-২০ সালের যে বাজেট পেশ করেছে তার প্রাথমিক লক্ষ্যই হল আর্থিক বিকাশ এবং জাতীয় নিরাপত্তা।
Advertisement



