উত্তরাখণ্ডে মৃত ৬৫, কেরলে ৪২

প্রবল বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড। ইতিমধ্যেই ৬৫ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ১১ জন। অপরদিকে কেরলে বন্যায় মারা গেছেন ৪২ জন।

Written by SNS Delhi | October 23, 2021 11:52 am

উত্তরাখণ্ডে উদ্ধারকার্যে প্রশাসন (Photo: SNS)

প্রবল বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড। ইতিমধ্যেই ৬৫ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ১১ জন। অপরদিকে কেরলে বন্যায় মারা গেছেন ৪২ জন। উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ৭ হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

উত্তরাখণ্ডের বহু জায়গায় রাস্তাঘাট বিপর্যস্ত, ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। মোবাইল বা ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ বহু জায়গায়। কারেন্ট নেই, জল নেই, খাবার নেই বহু জায়গায়। গত বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি খানিকটা কমলেও এখনও আবহাওয়া পুরোপুরি স্বস্তিদায়ক নয়।

এর মধ্যেই উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজ হয়ে যান ১৭ জন অভিযাত্রী। গত ১৪ অক্টোবর উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী সংলগ্ন হরসিল থেকে হিমাচলের কিন্নর জেলার ছিটকুলের দিকে রওনা দেয় দলটি। হরশিল-ছিটকুল সংযোগকারী দুর্গম লামখাগা পাসে পৌছানোর পর থেকেই ট্রেকারদের সন্ধান মিলছিল না।

কেরলের ৮ জেলায় গেরুয়া সতর্কতা জারি

ভারী বর্ষণে মুল্লাপেরিয়ার বাঁধে জলস্তর বৃদ্ধি

উত্তরাখণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

গত বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের স্টেট রেসপন্স ডিজাস্টার ফোর্স ৯ জনের দেহ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে ৫ জন পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়েছিলেন। অপর এক ট্রেকারকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে বিমানে উড়িয়ে আনা হয়েছে সেনা হাসপাতালে।

অন্যদিকে কেরালাতেও বাড়ছে বিপর্যয়, সে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা অন্ততপক্ষে ৪২। বহু বাড়িঘর জলের নীচে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় ভূমিধসে বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ইদুক্কি ও কায়াম জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দুই জেলায় ভূমিধস হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

তিরুঅনন্তপুরম, কোট্টায়াম কোল্লাম, আলাপুজা, এর্নাকুলাম সহ কয়েকটি জেলায় নতুন করে কমলা ও হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। এর মধ্যেই বন্যার জল একটু নামতেই কেরলে ৪২ রাজ্যের সুইস গেটগুলি খুলে দেওয়ায় ফের আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে নিচু এলাকাগুলোয়।

এনডিআরএফর তরফে অবিরাম উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। এর মধ্যেই রাজ্যজুড়ে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। আরও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

সামান্য কিছুক্ষণ বৃষ্টি বন্ধ থাকার পর ফের গতকাল ভারী বর্ষণের সাক্ষী থেকেছে কেরল। সঙ্গে প্রবল ঘুর্নিঝড় ও বজ্রপাত শুরু হয়েছে। প্রশাসনের তরফে নতুন করে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, ইরুক্কি, পালাক্কর, কোায়ম, পাথানমথি, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড়, ওয়ানাড় ও কান্নুর জেলায় ‘গেরুয়া সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে।

কেরলে ভারী বর্ষণ বন্যায় দ্রুক্ষ্ম জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরুক্কি জেলায় পেরিয়ার নদীর ওপর ১৩০ বছরের পুরোনো মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জলস্তর গত কয়েকদিন ধরে লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ১ থেকে ২০ অক্টোবরের মধ্যে এই বছর ৪৪৫.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রতিবছর এই সময়ের মধ্যে ৩০৩.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত পাশাপাশি, মৌসম ভবনের তরফে কোল্লাম, আলাপ্পুজা, এর্নাকুলাম, তিরুঅনন্তপুরম, ত্রিশুর ও কাসারাগোর জেলায় ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে।

ভারী বর্ষণে মুল্লাপেরিয়ার বাঁধে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ইরুক্কি, এর্নাকুলাম, কোত্তায়ম আলাপ্পুজা, ত্রিশূরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যদি বাঁধ ভেঙে পড়ে এই জেলাগুলো সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। মুল্লাপেরিয়ার বাঁধে জল ধারণের সর্বোচ্চ মাত্রা ১৪২ ফুট। গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাঁধের জলস্তর ১৩৫.১০ ফুট স্পর্শ করেছিল।