• facebook
  • twitter
Saturday, 17 May, 2025

নাশকতার ঝুঁকি বাড়তেই জম্মু-কাশ্মীরে বন্ধ ৪৮টি পর্যটনস্থল

পহেলগামের পর আরও বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এমন খবর পেয়েই পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাশ্মীর সরকার।

পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাল্টা নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। টানা পাঁচ রাত সীমান্ত লক্ষ্য করে গোলাগুলি চালিয়েছে পাক সেনা। এহেন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে কাশ্মীরের মোট ৮৭টি পর্যটনস্থলের মধ্যে ৪৮টি-ই সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, পহেলগামের পর আরও বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের থেকে এমন খবর পেয়েই পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাশ্মীর সরকার। কাউন্টার টেররিজম অপারেশনের মধ্যে ট্যুরিস্টদের আনাগোনা বন্ধ করতে, এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

কাশ্মীরে পর্যটকদের টার্গেট করে এত বড় জঙ্গি হামলার পরে স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কাশ্মীরের নানা জায়গায় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। পহেলগামের হামলাকারীদের নাগাল না পাওয়া গেলেও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক জঙ্গির ঘরবাড়ি। মাত্র ছ’দিনে উপত্যকার ৬০০টিরও বেশি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এর ‘প্রত্যাঘাত’ হিসাবে আবারও হামলার ছক কষছে জঙ্গিরা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জানাচ্ছে, গত কয়েক দিনে জম্মু ও কাশ্মীরের নানা প্রান্তে জঙ্গিদের একাধিক ‘স্লিপার সেল’ সক্রিয় হয়েছে। শীঘ্রই আবারও কোনও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে তারা। সেই আশঙ্কাতেই মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল ৪৮টি পর্যটনস্থল।

ইউসমার্গ, তৌসি ময়দান, দুধপাথরি, আহরবাল, কৌসরনাগ, বাঙ্গুস, কারিওয়ান ডাইভার চান্দিগাম, বাঙ্গাস ভ্যালি, উলার, রামপোরা, চিয়ারহড়, মুন্দিজ হাম্মাম মার্কুট জলপ্রপাত, খাম্পু, ভিজিটপ, সান টেম্পল, ভেরিনাগ গার্ডেনের মতো পর্যটনস্থলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুলমার্গ, সোনমার্গ, ডাল লেক-সহ অন্য যে সব পর্যটনকেন্দ্র খোলা রয়েছে, সেগুলিতেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি রিসর্ট এবং হোটেল বন্ধ করেছে কাশ্মীর সরকার। নিরাপত্তার খাতিরেই এমন সিদ্ধান্ত বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্র আরও জানিয়েছে, আইএসআইয়ের ছক অনুযায়ী পাক জঙ্গিরা স্থানীয় জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে নিরাপত্তা রক্ষী, অ-কাশ্মীরি, পুলিশ ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের টার্গেট করতে পারে। জঙ্গিদের পরিচালনশক্তি পাক চর সংস্থা আইএসআই ফন্দি এঁটেছে, ভারত সরকার যখন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করতে ব্যস্ত, তখন ফের হামলা করে নয়াদিল্লির প্ল্যান ভেস্তে দিতে হবে। গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে, কাশ্মীরের রেলওয়ে পরিকাঠামোতেও হামলা চালিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করার ছক কষেছে আইএসআই।

সপ্তাহখানেক আগেও কাশ্মীরের নানা ট্যুরিস্ট স্পট গমগম করছিল পর্যটকদের ভিড়ে। কিন্তু পহেলগাম হামলার পর সেখানে হঠাৎ করে কমে এসেছে পর্যটকদের ভিড়। বহু পর্যটক কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন, অনেকেই এই পরিস্থিতিতে আগাম বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। এর ফলে গাড়িচালক, ঘোড়াচালক, ছোট ব্যবসায়ী, হোটেল ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আরও নানা পেশার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের রোজগারেও ভাটা পড়েছে। ২০২৩ সাল থেকেই ধাপে ধাপে রের্কড পর্যটক এসেছেন কাশ্মীরে। এমনকী, চলতি গ্রীষ্মেও পর্যটনের মাধ্যমে বাড়তি অক্সিজেন পেত কাশ্মীর, সেই নিয়েও কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আগেই যেন সব শেষ।