দেশে করোনা আক্রান্ত বেড়ে ৩৯৫৯ ও মৃত ১১০, পশ্চিমবঙ্গে আরও চারজনের মৃত্যু

ভারতের করোনা সংক্রমণ থামার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতি ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

Written by SNS New Delhi | April 6, 2020 2:44 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: AFP)

ভারতের করোনা সংক্রমণ থামার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতি ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৫ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হছে ৩৫৭৭। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের।

রবিবার দিল্লিতে ৫৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০৫। এর মধ্যে ৩২০ জন নিজামউদ্দিনের তবলিঘ জামাতের জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

রাজস্থানের আরও ৪৭ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। রাজস্থানে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়ে ২৫৩। তামিলনাড়ুতে এখনও পর্যন্ত ৫৭১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫২২ জন দিল্লির বিতর্কিত জমায়েতে গিয়েছিলেন বলে সেই রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছে।

মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি যথেষ্টই খারাপ। আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩ জন ছিল, তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৭৪৮-এ। মুম্বইয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৩ জন, এদিন নতুন করে আরও ৮ জনের মৃত্যুর জেরে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০। মুম্বইয়ের লকডাউনের মেয়াদ ১৪ এপ্রিলের পরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন করে দিল্লিতে আরও ৫৮ জনের শরীরে মিলল করোনাভাইরাস। এর ফলে এরাজ্যে মোট আক্রান্ত বেড়ে হল ৫০৩। এদের মধ্যে নিজামউদ্দিনের সভায় যোগ দিয়েছিলেন ৩২০ জন। এদের মধ্যে ৬১ জনের বিদেশযোগ রয়েছে।

উত্তরাখন্ডে আরও ৪ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এই রাজ্যে মোট আক্রান্ত ২৬। পাঞ্জারে করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুরে লুধিয়ানার বাসিন্দা বস্তু ৬৯-এর প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়। পাঞ্জাবে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।

মধ্যপ্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিন দুপুরে ইন্দোরের এক হাসপাতালে বছর ৩৫-এর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এই নিয়ে মধ্যপ্রদেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯।

ওড়িশায় আরও ২ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। দু’জনেই ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা। এক সত্তর বছরের প্রৌঢ় অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছিলেন। রবিবার তার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ২৯ বছরের এক যুবরেও রিপোর্ট পজিটিভ।

এদিকে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সন্দেহ, কোভিড ১৯ সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে তাদের। যদিও স্বাস্থ্যভবন থেকে এব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। তাই করোনাভাইরাসের জেরে এরাজ্যে মৃত্যু বাড়ল কিনা তা নিয়ে এখনও সরকারিভাবে কিছু বলা হয়নি।

শনিবার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় মহেশতলার এক যুবকের। তার লালারসের নমুনা আগেই পাঠানো হয়েছিল। মৃত্যুর পরে দেখা যায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। যদিও হিমোফিলিয়ায় তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়াও তার শরীরে অন্য রোগ ছিল। ফলে এই যুবকের মৃত্যু ঠিক কি কারণে তা বর্তমানে স্বাস্থ্য দফতরের বিবেচনাধীন।

উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক রেলকর্মীর মৃত্যুর খবর এসেছে। প্রথমে রিপোর্ট কোভিড ১৯ নেগেটিভ এসেছিল। ছুটিও দিয়ে দেওয়া হয়েছিল হাসপাতাল থেকে। কালিম্পংয়ে যে মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল কয়েকদিন আগে তার সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল এই রেলকর্মীকে। সেই সময় করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছিল বলে খবর।

শনিবার রাতেই পিয়ারলেস হাসপাতালে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। রিপোর্ট পজিটিভ বলে জানা গিয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। রবিবার সকালে সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে হুগলির শেওড়াফুলির করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির। করোনা পজিটিভ হলেও যদি তার অন্য কোনও রোগ থাকে তাহলে ঠিক কোন রোগে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানানো হয়নি।

ফলে বাংলায় করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা এখনও সরকারিভাবে ৩। স্বাস্থ্যভবনের বুলেটিন ছাড়া বলা সম্ভব নয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই চারজনের মৃত্যু হয়েছে কিনা। যতদূর জানা গিয়েছে ৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই জানাবেন করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হল কিনা।