আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য। এরই মধ্যে চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়াকে খুনের ঘটনা নিয়ে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এলাকা। রবিবার এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন, যেই অপরাধ করবে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে তিনটি ফাঁসির সাজা ইতিমধ্যেই হয়েছে। আমি চাই কুলতলির ঘটনায় পুলিশ পকসো কোর্টে মামলা করে তিন মাসের মধ্যে ফাঁসির সাজা আদায় করে আনবে।’
রবিবার বডিগার্ড লাইনসের পুজোর উদ্বোধন করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বলেন, ‘প্রতিবাদ করুন। প্রতিবাদের অধিকার নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু দু’একটা ঘটনা ঘটে গেলেই বাংলায় চিৎকার বেশি করা হয়। কিন্তু অন্য কোথাও কিছু ঘটলে সবাই কেন চুপ? তখন মুখে লিউকোপ্লাস্টার দিয়ে রাখে। তখন প্রতিবাদ হয় না।’ তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছা করে ঘটনা ঘটায় না। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বেরিয়ে গিয়েছে। আমার ছবি দেখবেন, আমার মতোই দেখবেন, আমার গলায় বক্তৃতা শুনবেন, কিন্তু আমি নই, ফেক। এটাই এআই। এখন সাইবার ক্রাইম বেশি হচ্ছে। যারা সাইবার ক্রাইম করে তারাই এদের বেশি মদত দেয়।’ মানুষের কাছে মমতার আবেদন ভুল পোস্ট দেখলেই ফেক লিখবেন।ভুয়ো খবর ধরে দিতে পারলে রাজ্যের তরফে পুরস্কারও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisement
সমাজমাধ্যমে ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ক্রাইম ইস ক্রাইম। এর মধ্যে কোন ধর্ম, বর্ণ, জাতি নেই। যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা ভিডিওতে বসে ব্যবসা করছেন, তাদের মনে হয় না ধর্ষিতাদের নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করা যায় না ? তিনি বলেন, ‘এটাও প্রচারে আনুন যে ইউটিউবে দেওয়া খারাপ ভিডিও দেখে ছোটরা ভুল জিনিস শিখছে। ছোটদের মধ্যেও প্রবণতা বেড়েছে, কিন্তু তাদের দোষ দেওয়া যায় না। যত সিরিয়াল হয় ক্রাইম দেখায়। আমি বারবার বলি ক্রাইম দেখাবে না। এই অপরাধ দেখে অন্যরা শেখে।’ তিনি বলেন, ‘এগুলি সমাজকে অবক্ষয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছে।’
Advertisement
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাইবার ক্রাইম রুখতে বাড়ির মহিলাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,’যখনই দেখবেন উল্টোপাল্টা খবর ছড়ানো হচ্ছে , মেয়েদের দায়িত্ব দিচ্ছি, সেটা চিহ্নিত করে লিখবেন ফেক। তারপর পুলিশকে পাঠিয়ে দিন সাইবার ক্রাইমে।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, সবাই পুলিশের দিকে আঙুল তুলছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে কাজ যে করে , ভুল সেই করে। আমরা সেই ভুলকেই বড় করে দেখাই। একবারও তো বলি না বর্ষার সময় ট্রাফিক পুলিশ কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে? আগুন লাগলে পুলিশই গিয়ে ডোমকলকে আগে জায়গা করে দেয়। রোগীর পরিবার গেলে পুলিশ আম্বুলান্সকে আগে জায়গা করে দেয়, সেটা তো কেউ বলে না ? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশ এসব কাজ করতে পারে তাঁদের পরিবার-পরিজন সঙ্গে আছে বলে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দেন সরকার পুলিশের আছে এবং থাকবে।
Advertisement



