• facebook
  • twitter
Wednesday, 20 August, 2025

শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে তরমুজের বীজের জুড়ি মেলা ভার

তরমুজের বীজে থাকা মনো- ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌যন্ত্রের পক্ষে বিশেষ উপকারী। সেটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

প্রতীকী চিত্র

গরমকালে পথচলতি ফলের দোকানে কেটে রাখা টকটকে লাল তরমুজের দিকে আমাদের সকলেরই চোখ টানে। মিষ্টি, জলভর্তি এই রসালো খেলে আমাদের তেষ্টা যেমন মেটে, তেমনি রসনারও তৃপ্তি হয়। প্রাণে আনে স্বস্তির এক আমেজ। কিন্তু সকলে এই সুস্বাদু ফল খেলেও এর বীজটা আমরা আবর্জনায় ফেলে দিই। অথচ আমরা অনেকেই জানিই না, এই ক্ষুদ্র বীজের মহাগুণের কথা। ছোট ছোট এই বীজে রয়েছে শরীরের একাধিক প্রয়োজনীয় উপাদান।

পুষ্টিবিদদের মতে, তরমুজের বীজ খাওয়া শুধু নিরাপদই নয়, এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী এক ‘সুপারফুড’ও। সেটি পদ্ধতি মেনে খেলে ক্ষতিকর অতিরিক্ত কোলেস্টরেলকে শরীর থেকে তরল আকারে বের করে দেয়।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই বীজে কী কী গুণ রয়েছে এবং তা খেলে শরীরের কী কী উপকার পাওয়া যায়–

পুষিবিদরা জানিয়েছেন, তরমুজের বীজে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। তাঁদের মতে, নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে এই বীজ খেলে শরীরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

প্রোটিন
জানা গিয়েছে, এক মুঠো শুকনো তরমুজের বীজে পাওয়া যায় প্রায় ৩ গ্রাম প্রোটিন। এই প্রোটিন শরীরের পেশি গঠন, কোষ মেরামত এবং রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে।

আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম
এই বীজে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম। এই আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। শরীরের ক্লান্তি দূর করে। আবার ম্যাগনেশিয়াম স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখে এবং হাড় মজবুত করে।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স
তরমুজের বীজে রয়েছে উপযুক্ত পরিমানে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এতে থাকা থায়ামিন, নিয়াসিন, ফলেট ইত্যাদি ভিটামিন শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে এবং স্নায়ুর স্বাস্থ্য ভাল রাখে।

ভাল ফ্যাট
তরমুজের বীজে থাকা মনো- ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌যন্ত্রের পক্ষে বিশেষ উপকারী। সেটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

তরমুজের বীজ খাওয়া পদ্ধতি
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, কাঁচা তরমুজের বীজ হজম করা শরীরের পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য। তাই এই বীজ সরাসরি খাওয়া একদম উচিত নয়। পরিবর্তে বীজগুলো শুকিয়ে হালকা ভেজে নিলে, তা হয়ে যথেষ্ট সহজপাচ্য ও সুস্বাদু হয়ে ওঠে। সেটি কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে তার পর ভাজলে আরও ভালো হয়। এছাড়াও এই বীজ গুঁড়ো করে স্মুদি বা দুধে মেশানো যায়। এমনকি সেটি স্যালাডের উপরেও ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

সাবধানতা
তবে বেশ কিছু রোগীর ক্ষেত্রে তরমুজের বীজ খাওয়া যথেষ্ট বিপদজনক। বিশেষ করে যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে বা যাঁরা খনিজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দিষ্ট ডায়েট অনুসরণ করছেন, তাঁদের পক্ষে তরমুজের বীজ বেশি খাওয়া একদম উচিত হবে না। বিশেষ করে শরীরে ম্যাগনেশিয়াম বা পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকলে তাঁর ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই যাঁরা কোনও দীর্ঘস্থায়ী অসুখে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তরমুজের বীজ খাদ্যতালিকায় যোগ করা উচিত।