বর্তমানে হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীতকালে বিশেষ করে হার্ট অ্যটাকে মৃত্যুর সংখ্যায় আধিক্য দেখা যায়। যদিও এখন ওষুধ এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় এই রোগের চিকিৎসা করা হয়, কিন্তু সতর্কতার বিকল্প উপায়ও অবলম্বন করা প্রয়োজন।
কিছু কৌশলের একটি হল, খাবারে মাংসের পরিমাণ হ্রাস করা এবং বিকল্প হিসেবে মটরশুটি, তোফু এবং বাদামের মতো উপাদান ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা। বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ শাকসবজি এবং শস্য যেমন, পালংশাক, টম্যাটো এবং মাশরুম খাওয়া জরুরি। হার্ভার্ড-এর গবেষকরা একটি ৩০ বছরের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন যা, হৃদয়ের স্বাস্থ্যের উপর প্রাণীভিত্তিক প্রোটিনের চেয়ে উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন গ্রহণের বেশি প্রভাব নজরে এনেছে।
গবেষকদের মতে যারা বেশি উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন গ্রহণ করেন, তাদের সাধারণত সিএইচডি এবং সিভিডি উভয়েরই অনুপাত কম থাকে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মুখপাত্রের মতে, হৃদরোগ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং মহিলা, উভয়েরই মৃত্যুর প্রধান কারণ। ২০২২ সালে প্রতি ৫ জনের মধ্যে প্রায় ১ জনের মৃত্যুর কারণ ছিল হৃদরোগ।
কারও হৃদরোগ হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন জেনেটিক্স, খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং তামাকজাত পণ্য ধূমপান ও মদ্যপানের মতো অভ্যাস। হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ে যাঁরা ভাবছেন, তাঁদের নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। চর্বিযুক্ত লাল মাংস বর্জন করে lean meatবা হালকা মাংস বেছে নিতে হবে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
যদিও প্রোটিন আমাদের খাদ্যতালিকার প্রধান উপকরণ কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে চর্বিহীন প্রোটিন হৃৎপিণ্ডের জন্য বেশি উপকারী। সাম্প্রতিক সময়ে নিরামিষভোজীরা কুইনোয়া, এডামেম এবং ছোলা জাতীয় উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিনের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গবেষকরা বলছেন প্রোটিনের উৎস হিসাবে প্রতিদিন বেশি করে বাদাম খান। বাদামে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন, ফ্যাট এবং ফাইবার থাকে। এছাড়া এর গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে, সিভিডি এবং কিছু ক্যান্সার কমায় এবং মগজের কার্যকারিতাও উন্নত করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, লাল মাংসের পরিবর্তে আরও বেশি উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন খাওয়ার ফলে, হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা-সহ একাধিক কার্ডিওমেটাবলিক অবস্থার ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।