রাজ্যপালের নির্দেশে অপসারিত উপাচার্য 

কলকাতা, ১১ আগস্ট – স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পালকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।  ইউজিসির নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি,  অপসারিত উপাচার্যকে নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে নিয়োগ হয়েছে, এই যুক্তিতে রাজ্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরানো হয়েছে ।
এই নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত ফের নতুন মাত্রা পেল। পরবর্তী উপাচার্য কাকে করা হবে , সেই বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে দুটি নাম প্রস্তাব করতে বলা হয় রাজভবনের তরফে।    

এর আগে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম নিয়ে বার তিনেক চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। শেষ চিঠি পাঠানো হয়েছিল গত সোমবার। নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরেও কেন পদ আগলে বসে রয়েছেন উপাচার্য তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল রাজভবনের পাঠানো চিঠিতে। চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য সুহৃতা পালের কাছ থেকে কৈফিয়তও তলব করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যদিও সেই চিঠির জবাব দেননি উপাচার্য। উলটে তিনি আইনি পদক্ষেপের ভাবনাচিন্তা করছিলেন বলে শোনা যায় ।
সূত্রের খবর, সুহৃতা পালকে ইউজিসির নিয়ম মেনে নিয়োগ করা কয় নি।  তাঁর নিয়োগ হয়েছিল সার্চ কমিটির মাধ্যমে।  তবে সেই সময় সার্চ কমিটিতে ইউজিসির কোন প্রতিনিধি ছিলেন না তাই উপাচার্যকে কেন পদে রাখা হবে সেই প্রশ্ন তোলে রাজভবন।   
উল্লেখ্য, রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছুদিন ধরেই চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছিল। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল অরাজকতার অভিযোগ ওঠে।  উপাচার্যের বিরুদ্ধে রাজ্যপালকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছিল চিকিৎসক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ। তখনই অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের নিয়োগের বৈধতা নিয়েও। শেষ পর্যন্ত রাজভবনের তরফে সরিয়ে দেওয়া হল উপাচার্যকে।
এর আগেও রাজ্য সরকারের নিয়োগ করা একাধিক উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমনকী, আলাদা করে নিজের মতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উপাচার্য নিয়োগও করেছেন। যা নিয়ে চরমে উঠেছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার বিরোধ বেধেছে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। সুহৃতা পালের অপসারণ সেই সংঘাতের পরিসর আরও বাড়াল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ না করেই রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেন প্রাক্তন উপাচার্যদের একাংশ। তবে এবার স্বাস্থ্য ভবনের কাছে দুজনের নাম জানতে চেয়েছে রাজভবন।