জোটের বৈঠকে চেয়ার ফাঁকা রেখে বার্তা ‘ইন্ডিয়া’-র  

Written by SNS September 13, 2023 7:30 pm

দিল্লি, ১৩ সেপ্টেম্বর – বুধবার দিল্লিতে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের বাড়িতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র সমন্বয় কমিটির বৈঠক। কিন্তু ইডি তলব করায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সেই বৈঠকে থাকতে পারলেন না অভিষেক। দুর্নীতির মামলায় ফের তলব করা হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে বেছে বেছে ঠিক বুধবার অর্থাৎ ১৩ সেপ্টেম্বর দিনটিতেই অভিষেককে কেন তলব করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। 

বুধবার দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক। সেই কমিটির একজন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ইডি-র নোটিসের কারণেই যে অভিষেক যেতে পারছেন না সেই বার্তা আরও স্পষ্ট করতে দল অন্য কোনও প্রতিনিধিকেও পাঠায় নি । এবার জোট শরিকের তরফেও অভিষেকের সমর্থনে বার্তা দেওয়া হল। অভিষেকের জন্য চেয়ার ফাঁকা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সঞ্জয় রাউত।

গত ১০ সেপ্টেম্বর তলব করা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অভিষেক নিজেই এক্স মাধ্যমে সেকথা  জানান। এরপরই তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, বিরোধী জোটের বৈঠকের দিনই তলব করার পিছনে  ষড়যন্ত্র রয়েছে। এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের বাসভবনে বুধবার বিকেল ৪ টে থেকে বৈঠক হওয়ার কথা। তাই শরদ পাওয়ার ও কংগ্রেস নেতা কে সি বেনুগোপাল-কে এ ব্যাপারে আগেই অবগত করেছে রাজ্যের শাসক দল। তবে গত তিন দিনে বিরোধী জোটের কোনও শরিককে অভিষেকের সমর্থনে কথা বলতে দেখা যায়নি। সূত্রের খবর, তৃণমূল চাইছিল যাতে ষড়যন্ত্রের বার্তা আরও জোরালো হয়।

বৈঠকের দিন সকালেই শিব সেনা নেতা সঞ্জয় রাউত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে আক্রমণ করেন বিজেপিকে। তাঁর দাবি, ইডি বা বিজেপি চায় না যে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হোক। এই বিষয়ে ‘ইন্ডিয়া’র অন্য সদস্য দলগুলি যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশে রয়েছে, সেই বার্তাও দিয়েছেন রাউত। তিনি জানিয়েছেন, বিরোধীদের কীভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থা হেনস্থা করছে, সেই বার্তা দিতে অভিষেকের চেয়ার ফাঁকা রাখা হচ্ছে। দলের মুখপাত্র রাউত বুধবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “মুম্বইয়ের বৈঠকে যেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেই মতোই আমরা আজ বৈঠকে বসতে চলেছি।” এর পরই সমন্বয় কমিটির অন্যতম সদস্য রাউত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির উদ্দেশে তোপ দেগে বলেন, ‘অভিষেক আজ বৈঠকে থাকতে পারলেন না, কারণ ইডি আর বিজেপি তেমনটা চায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার চায়নি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে এসে ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিন।’  তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁর জন্য একটি আসন ফাঁকা রেখে এই বার্তাই দিতে চাইছি যে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি ইন্ডিয়ার সদস্যদের উপর অত্যাচার করছে।’

জোট শরিক হিসেবে প্রথম শিব সেনাই অভিষেক তথা তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহলের নজর রয়েছে বাম ও কংগ্রেসের দিকে। ‘ইন্ডিয়া’-র জোট শরিক হলেও বাম ও কংগ্রেস উভয়েই রাজ্যে তৃণমূলের ঘোর বিরোধী। তাই তারা কোনও বার্তা দেয় কি না, সেদিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক মহল।

মঙ্গলবারই তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, সমন্বয় কমিটির বৈঠকে নয়, ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সেই যাবেন অভিষেক। বুধবার সকাল ১১টা ৩৪ মিনিটে ইডি দফতরে ঢোকেন অভিষেক।

তৃণমূল সূত্রের খবর, অভিষেকের পরিবর্তে বৈঠকে দল কাউকে পাঠাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কমিটির সদস্য ছাড়া অন্য কেউ থাকার পক্ষপাতী নয় তৃণমূল। বৈঠকে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার রূপরেখা তৈরির উপর জোর দেওয়া হোক বলেই তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।  ইন্ডিয়া জোটের পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ ও স্থান চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হতে পারে এদিনই ।