বিচারপতি নিয়োগে চুপ না থাকার হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের

Written by SNS September 26, 2023 7:49 pm

দিল্লি, ২৬ সেপ্টেম্বর– বিচারপতি নিয়োগকে কেন্দ্র করে এবার সংঘাতের পথে দিল্লি-শীর্ষ আদালত। বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সরাসরি হুঁশিয়ারি, আর চুপ থাকবে না শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য কলেজিয়াম ব্যবস্থা রয়েছে। এই কলেজিয়ামই বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সুপারিশ করে। সেই মোতাবেক উচ্চ আদালতে নিয়োগের জন্য দেশের বিভিন্ন হাইকোর্ট থেকে ৮০টি সুপারিশ এসেছে। কিন্তু মোদি সরকার সেই সুপারিশগুলি কলেজিয়ামের কাছে পাঠায়নি। তা নিয়েই এবার কেন্দ্রের কাছে কৈফিয়ত চাইল শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কল ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া মঙ্গলবার বলেন, “বিষয়টা আমরা খুব কাছ থেকেই নজরে রেখেছি। হাইকোর্ট থেকে পাঠানো ৮০টি নাম দশ মাস ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি মৌলিক প্রক্রিয়া রয়েছে। সরকারকে মতামত জানাতে হবে, যাতে কলেজিয়াম কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”

দুই বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এদিন আরও বলে, ২৬জন বিচারপতি ও একটি স্পর্শকাতর হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি বকেয়া রয়েছে। তা ছাড়া আরও ৮টি হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপার ঝুলে রয়েছে। বিচারপতি কল বলেন, “আমি জানি যে কত জনের নাম ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কলেজিয়ামকে জানানো হচ্ছে না।”

সুপ্রিম কোর্টের এহেন অসন্তোষের মুখে পড়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি জবাব দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় চান। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সরকারকে ২ সপ্তাহ সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে কেন্দ্রকে স্পষ্ট জবাব দিতে হবে।

বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কল এদিন তাঁর পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, “আমার অনেক কিছু বলার রয়েছে। কিন্তু নিজেকে আটকে রেখেছি। আমি চুপ করে রয়েছি কারণ অ্যাটর্নি জেনারেল আরও সাত দিন সময় চেয়েছেন। কিন্তু পরদিন আর চুপ থাকব না।”

কেন্দ্র নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের ইদানীং বারবার সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রের মন্ত্রীদের বক্তব্য, বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রের আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে।

সেই উদ্দেশে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়ন্টমেন্ট আইন পাশ করেছিল সরকার। কিন্তু ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে তা খারিজ করার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। কারণ ওই আইনে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সরকারের হাতে অধিকতর ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

কলেজিয়াম ব্যবস্থায় দেশের প্রধান বিচারপতি ও অন্য প্রবীণ বিচারপতিরা মিলে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে নাম সুপারিশ করে। ওই নাম তারপর সরকারের কাছে পাঠানো হয়। সরকার সেই সব নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর পর রাষ্ট্রপতি সরকারি ভাবে বিচারপতি নিয়োগ করেন।

সাধারণত আগে দেখা যেত যে কলেজিয়াম যে সব নাম সুপারিশ করে, তাতেই মান্যতা দেয় কেন্দ্র। কিন্তু মোদী জমানায় সেই প্রথা বা রীতির উপর রাশ টানার শুরু হয়েছে। তাতেই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।