দশ বছর পর ভারতে এলেও পাক মন্ত্রীকে খাতির নয় ভারতের  

Written by Sunita Das May 4, 2023 7:26 pm

পন্ডিচেরী, ৪ মে– প্রায় দশ বছর পর পাকিস্তানের কোনও মন্ত্রী ভারতে এলেন। যদিও তিনি ইতিমধ্যেই ভারতে বেশ খ্যাত। কারণ তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ‘কসাই’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। সেই বিলাবল ভুট্টো বৃহস্পতিবার ভারতে এলেন । বৃহস্পতি ও শুক্রবার গোয়ায় হতে চলেছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। সেখানে পাকিস্তান ছাড়াও চিন, কাজাখস্তান, রাশিয়া, কিরগিজস্তান, তাজাকিস্তান ও উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেবেন।

চিন, রাশিয়া এবং পাকিস্তান ও ভারতের বিদেশমন্ত্রীদের এক মঞ্চে উপস্থিতিও সাম্প্রতিককালে বিরল ঘটনা। আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল, চিন, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীরা হাজির থাকলেও গোয়ার সম্মেলন ঘিরে যত কৌতুহল বিলাবল ও ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে নিয়ে। তাঁদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে কৌতুহল নিরসন হয়নি সম্মেলন শুরু কয়েক ঘণ্টা আগেও। যদিও বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, চিন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে জয়শঙ্করের।

বিলাবল পাক বিদেশ মন্ত্রী হিসাবে এই প্রথম ভারত সফরে আসছেন। স্বভাবতই নিকট প্রতিবেশীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে দুই দেশেই। তাতে নয়ামাত্রা যোগ করেছেন বুধবার ভারতে আসা পাক সাংবাদিকরা। এসসিও সম্মেলন কভার করতে ভারত সরকার ভিসা দিয়েছে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সাংবাদিককে। বুধবার পাঞ্জাবে ওয়াঘা বর্ডার পেরনোর পর পরই তাঁরা দু-দেশের মধ্যে সংঘাত বন্ধের আর্জি জানিয়ে টুইট করেছেন। বলেছেন, অফুরন্ত সম্ভাবনাকে ছুঁতে দু দেশের মধ্যে শান্তি বিরাজ করুক। পাক সাংবাদিকেরা বিলাবল-জয়শঙ্করের একান্ত বৈঠকেরও আর্জি জানান।

কিন্তু দিল্লির পররাষ্ট্রমন্ত্রকের খবর, এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে গোয়ার সম্মেলনে পাক বিদেশমন্ত্রীকে আলাদা করে কূটনৈতিক খাতিরযত্ন করার কোনও বাসনা ভারতের নেই। তবে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাকিস্তান প্রকাশ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা না বললেও কূটনৈতিক চ্যানেলে বার্তা পাঠিয়েছে। আসলে পাকিস্তানের অভ্যন্তরেই এখন ভারতের সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরির দাবি আছে। যদিও এখন পর্যন্ত দিল্লির কর্তাদের মনোভাব, বাকি সদস্য দেশের পরারাষ্ট্রমন্ত্রীদের মতোই ব্যবহার করা হবে বিলাবলের সঙ্গে।

গত মাসেই বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বিলাবলের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছিলেন। প্রশ্নের জবাবে বলেছিলে, ‘আমরা সেই প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা নিয়ে ভাবিত নই যারা জঙ্গিবাদ রপ্তানি করে, অন্য দেশে নাশকতাকে প্রশ্রয় দেয়।’

বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, পাক বিদেশ মন্ত্রীকে আলাদা করে গুরুত্ব না দিয়ে নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে তাদের আচরণ নিয়ে বার্তা দিতে চায়। তাতে দেশে বিলাবল এবং পাক সরকার বিপাকে পড়বে। কারণ ক্রমবর্ধমান আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তানের ভিতর থেকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের দাবি উঠেছে সে দেশের নাগরিক সমাজ এবং রাজনীতিকদের মধ্য থেকেও।