মনোনয়নের সময় পর্যাপ্ত নয়, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক নির্বাচন কমিশন – পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের

কলকাতা, ৯ জুন – আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে।  প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ৭৫ হাজার আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ৫ দিন সময় কম বলে মনে করছে কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে মনোনয়ন থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত  সময় অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে করা হয়েছে। মনোনয়নে সময় খুবই কম দেওয়া হয়েছে। ভোটের নির্ঘণ্ট পুনর্বিবেচনা করা উচিত। মহকুমাশাসক, জেলাশাসক বা কমিশনের অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখতে হবে।’’ তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। একই সঙ্গে প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথাও বলেছে আদালত। সব বিষয় নিয়ে কমিশনকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
 
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন পেশ করার সময়সীমা ৯ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত । কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিরোধী দলগুলি। একইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল।
এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘আদালত প্রাথমিক ভাবে মনে করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য যে সময় দিয়েছে তা উপযুক্ত নয়। ওই সময়সীমা আরও বাড়ানো উচিত।’’ প্রধান বিচারপতি আরও বলেন,‘ভোটগ্রহণ থেকে গণনা,  গোটা প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে।’ রাজ্য প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে একত্রে কাজ করতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এই বিষয়ে রাজ্য আগামী সোমবার তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করার জন্য এই মামলাগুলি দায়ের হয়নি, ভোট যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় সেদিকে কমিশনকে নজর রাখতে হবে।’ চুক্তিভিত্তিক কর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যবহার করা নিয়ে আদালতের কোনও নির্দেশ থাকলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা মেনে চলতে হবে বলেও শুক্রবার জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, ভোট সংক্রান্ত কোন কোন কাজে সিভিকদের ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একটি নির্দেশ ছিল। কমিশনকে ওই নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ করতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট।
শুক্রবার বিজেপির আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী এবং কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিজেপি এবং কংগ্রেসের তরফে জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আবেদন জানানো হলে অনুমতি দেয় আদালত। দ্রুত শুনানির আর্জিও মঞ্জুর করেন প্রধান বিচারপতি। শুক্রবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়।