মালদহের গাজোলে ফের মুখোমুখি সংঘাতে জাতীয় ও রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন

গাজোল , ১ এপ্রিল – ফের সংঘাতে জাতীয় ও রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। মালদহের গাজোলে পরিদর্শন ঘিরে দুই কমিশনের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে ওঠে । জাতীয় সুরক্ষা কমিশনের অভিযোগ, সেখানে পরিদর্শনে তাঁরা বাধা পান। বাধা দেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের আধিকারিকরা। সেই বিবাদ গড়ায় দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে হাতাহাতিতে। এর জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।  ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার সকালে গিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন কেন্দ্র এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের আধিকারিকরা। সেই ঘটনার জেরেই নির্যাতিতার বাড়ির সামনে রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে মারামারি শুরু হয়, এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

কয়েক দিন আগেই মালদার গাজোলে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলের মধ্যেই ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার তদন্ত করতে শনিবার সকালে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের। কিন্তু তার প্রায় আধ ঘণ্টা আগেই সেখানে পৌঁছয় রাজ্যের প্রতিনিধি দল।
অভিযোগ, নির্যাতিতার বাড়ির সামনে পৌঁছে সুদেষ্ণা এবং রাজ্য কমিশনের সদস্যদের ‘গেট আউট’ বলে বেরিয়ে যেতে বলেন প্রিয়ঙ্ক। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে চান তিনি। কেন ঘটনার ১০ দিন পর রাজ্যের দল এসেছেন, সেই প্রশ্নও তোলেন প্রিয়ঙ্ক। তিনি জানান, রাজ্যের দল যত ক্ষণ না বাইরে বেরোবে , তত ক্ষণ তিনি বাড়ির ভিতরে ঢুকবেন না। অন্য দিকে, সুদেষ্ণার দাবি, এই বিষয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রের কমিশনের এক সঙ্গে কাজ করার কথা থাকলেও বার বার বাধা সৃষ্টি করছেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা।

প্রিয়ঙ্ক জানান, শুক্রবারের পর শনিবারও কেন্দ্রীয় কমিশনের কাজে বাধা দিচ্ছে রাজ্য। নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিব চান না যে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত হোক। বাংলার ব্যর্থতা  দিল্লি পর্যন্ত যাতে না পৌঁছয় তাই বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিলজলাতেও একই জিনিস হয়েছে।

কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগোকে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এই অভিযোগে  ঘটনাস্থলেই ধর্নায় বসেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এবং উত্তর মালদা মহিলা সমিতির সভানেত্রী ছন্দা চৌধুরী। পাশাপাশি রাজ্যের প্রতিনিধি দলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। সেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য সাগরিকা সরকার। তিনি যাওয়ার পর উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাগরিকা-সহ তৃণমূলের সদস্যেরা যখন সেখানে পৌঁছন, তখন কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষার দল নির্যাতিতার বাড়ির ভিতরে ঢুকেছিল। তত ক্ষণে বেরিয়ে এসেছিলেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষার কমিশনের প্রতিনিধিরা। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দিকে সদলবলে ঝাঁপিয়ে পড়েন সাগরিকা। দু’পক্ষই একে অপরের দিকে কিল-চড়-ঘুষি চালাতে থাকে। জুতো হাতে নিয়ে বিজেপি কর্মীদের শাসাতেও দেখা যায় সাগরিকাকে। তবে পুলিশি মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।