তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীক প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুঁশিয়ারি  বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের 

Written by SNS November 25, 2022 2:58 pm

কলকাতা,২৫ নভেম্বর — ভারতের ইতিহাসে এমন দুঃসাহসিক বিচারপতি বিরল দৃষ্টান্ত।বেশ কয়েকমাস ধরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে একটি সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তিনি যে সব মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আন্দোলনের ঝড় ওঠে। 

চাকরিপ্রার্থীদের লড়াইতে তাদের চাকরি না পাইয়ে দেওয়া পর্যন্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় হাল ছাড়তে রাজি নন। কিন্তু শুক্রবার সে সবকে ছাপিয়ে যেন নতুন রেকর্ড ও দৃষ্টান্ত স্থাপন হল।হালফিলে কোনও সরকার কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্কে উচ্চ আদালতের কোনও বিচারপতি এমন পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন কিনা তা অনেকেই পারছেন না। 

তিনি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এতটাই রেগে রয়েছেন যে ,তিনি  নিয়োগ দুর্নীতির শুনানির সমরণ করতে পারছেন না।য়ে তাঁর ক্ষোভ জানিয়ে পষ্টাপষ্টিই বলেছেন যে, প্রয়োজনে তিনি গোটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভাকে এই মামলায় পার্টি করে দিতে পারেন।সে ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার সবাইকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, তিনি নির্বাচন কমিশনকে বলবেন যে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীক প্রত্যাহার করে নিতে।

গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর একটি প্রেস কনফারেন্স থেকে।পুজোর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ব্রাত্য সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশনের  মাধ্যমে যাঁরা ব্যতিক্রমী ভাবে চাকরি পেয়েছেন, বা যাঁদের মেধা তালিকার ক্রম ভেঙে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কারও চাকরি বাতিলের পক্ষে নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ।আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও চান না যে কোনও যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হোক।তাই কেউ যাতে বঞ্চিত না হন সেজন্য ৫২৬১টি শূন্য পদ তথা সুপার নিউমেরি পদ তৈরি করা হয়েছে।এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত নিয়েই শুক্রবার প্রশ্নে প্রশ্নে শিক্ষাসচিব মনীশ জৈনকে জেরবার করে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে আমরা অযোগ্যদের পাশে নেই। নাহলে এমন পদক্ষেপ করব যেটা গোটা দেশে কখনও হয়নি।”বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এখানেই না থেমে বলেন, “আমার সন্দেহ, হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই আর নাহলে গণতন্ত্র বিকশিতই হয়নি।আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দেব। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে।”

এর পরে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি বলেন, “আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসেবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না!”