ভারত -কানাডা সম্পর্কে অবনতি, জম্মু-কাশ্মীর সফর নিয়ে সতর্কতা জারি কানাডা সরকারের  

Written by SNS September 20, 2023 4:12 pm

দিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর – ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরার মধ্যেই উত্তেজনা আরও বাড়ছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুতে ভারতের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। একইসঙ্গে উত্তেজনা না বাড়িয়ে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আর্জিও জানিয়েছেন।এদিকে ভারত সফর নিয়ে কানাডার নাগরিকদের জন্য পরামর্শ জারি করেছে কানাডা সরকার। ভারত সফরে গেলে নাগরিকদের যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে জাউস্তিন ট্রুডোর সরকার। বিশেষত জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কানাডা সরকার।

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার মৃত্যু নিয়ে ভারতের দিকে আঙুল তোলার কারণে কানাডা ও ভারত এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে। এই পরিস্থিতির মাঝেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মঙ্গলবার বলেন,  “আমরা উসকাতে বা উত্তেজনা বাড়াতে চাইছি না। সমস্ত বিরোধ মেটাতে এবং সঠিক প্রক্রিয়া যাতে অনুসরণ করা হয়, সেই লক্ষ্যে ভারত সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে আমরা কাজ করতে চাই। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার খুনের বিষয়টি ভারতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। ”

ওদিকে কানাডা সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে সে দেশের নাগরিকরা যাতে জম্মু ও কাশ্মীর সফর এড়িয়ে চলেন। কারণ সেখানে কানাডার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।  নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাস, চরমপন্থা, নাগরিক অস্থিরতা, এবং অপহরণের আশংকা রয়েছে। তবে এই নির্দেশিকা ভারতের অন্য কোন রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলে জানিয়েছে কানাডার সরকার। পাশাপাশি ভারতে যে কোনওরকম জমায়েত বা বিক্ষোভ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ই কানাডায় খালিস্তানি কার্যকলাপ বৃদ্ধি ও ভারতীয় দূতাবাসে হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । এরপরই ভারতের সঙ্গে  বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুর পিছনে ভারতের হাত থাকতে পারে, ট্রুডোর এই মন্তব্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবারই কানাডার হাউস অব কমন্সে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, “কানাডার নিরাপত্তা বাহিনী কানাডার নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার সঙ্গে ভারত সরকারের সম্ভাব্য যোগ নিয়ে তদন্ত করছে”। কানাডার এই অভিযোগ সঙ্গে সঙ্গে অস্বীকার করা হয় ভারতের তরফে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, কানাডায় ঘটা হিংসার ঘটনায় ভারতের যোগ থাকার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। জি-২০ সম্মেলনের সময়ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী এ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এইধরনের অভিযোগ করেছিলেন এবং সেই সময়ও দাবি খারিজ করে দেওয়া হয় বলেই জানানো হয়।

এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। বিগত দুই দিনে ভারত ও কানাডা-দুই দেশই অপর দেশের রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করেছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকাও।