মরণফাঁদ মুম্বই-নাগপুর সড়ক, ৫ মাসে দুর্ঘটনায় মৃত ৩৯ 

Written by SNS May 20, 2023 6:45 pm

মুম্বাই, ২০ মে– দেশের নতুন হাইওয়ে যেন মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে পথযাত্রীদের কাছে! পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে উদ্বোধন হওয়া মুম্বই-নাগপুর সম্রুদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে এই বছর এপ্রিল পর্যন্ত পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৯।  জখম হয়েছেন ১৪৩ জন।

স্টেট হাইওয়ে পুলিশ অফিসাররা শুক্রবার এ বিষয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তাঁরা জানান, এত দুর্ঘটনার মূল কারণ ‘রোড হিপনোসিস’ । এই সমস্যাকে ‘হোয়াইট লাইন ফিভার’ও বলা হয়ে থাকে। এই সমস্যার কারণে গাড়িচালকরা সাময়িক ভাবে ভুলে যান, তাঁদের কী করতে হবে। ভালভাবে কিছু না ভেবেই যেন তাঁরা রাস্তার হাতে ছেড়ে দেন স্টিয়ারিং। শুনতে আজগুবি মনে হলেও, ফাঁকা, দীর্ঘ রাস্তায় লং ড্রাইভের সময়ে এই সমস্যায় প্রায়ই পড়েন চালকরা।

বিষয়টি বোঝানোর জন্য, ছোট একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। অনেক সময়ে কেউ হয়তো সকালে গাড়ি চালিয়ে বেরোলেন অফিসে যাবেন বলে, সুনির্দিষ্ট পথে চালিয়ে হয়তো পৌঁছেও গেলেন, তবে অনেক সময়ই দেখা যায়, তাঁর হয়তো সেই পথের কথা বা খুঁটিনাটির কথা মনেই পড়ছে না। কীভাবে ড্রাইভ করে এলেন, সেই স্মৃতি যেন মুছে গেছে। এক্ষেত্রে তিনি রোড হিপনোটিজমের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। 

১৯২১ সালে একটি গবেষণাপত্রে প্রথম উঠে আসে এই শব্দ। এতে বলা হয়, বহু লং ড্রাইভে দেখা যায়, গাড়ির চালকেরা তাঁদের চোখ খোলা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন এবং স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চালান। তবে তাঁর নিজের তা স্বাভাবিক মনে হলেও, এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে অনেকটাই। যেন মনে হয় গাড়িটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলছে। কিন্তু আসলে তো তা নয়।

এর ব্যাখ্যা হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মানুষের শরীরে ও মাথায় একটি স্বয়ংক্রিয়তা এমনিই কাজ করে। এই স্বয়ংক্রিয়তা তাঁদের কাজ এবং চিন্তা দুইই একসঙ্গে ঘটাতে পারে। যেমন হাঁটা, সাইকেল চালানো, উলবোনা– এইসব কাজগুলি অনুশীলনের কারণে, অন্য কথা ভাবতে ভাবতেও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে পারে মানুষ। গাড়ি চালানোও এমনই একটি কাজ। এর উপর একবার দক্ষতা আয়ত্ত হয়ে গেলে, অন্য কাজে মন দিয়েও গাড়ি নির্ভুলভাবেই চালানো সম্ভব।

তবে সমস্যা তখন হয়, যখন বাইরে থেকে অপ্রত্যাশিত কোনও বাধা চলে আসে। পথের ডিভাইডার বা অন্য গাড়ি বা অন্য কোনওরকম বাধায় তখন সেই স্বয়ংক্রিয় গাড়িচালনাকে বন্ধ করে, চিন্তার জগৎ থেকে মস্তিষ্ককে সরিয়ে এনে ফের গাড়ি চালনায় মন দেওয়া এবং আসন্ন বিপদকে এড়ানো অনেক সময় মুশকিল হয়ে যায়, যার ফলস্বরূপ ঘটে দুর্ঘটনা।