দাবদাহে মৃত্যু মিছিল উত্তরপ্রদেশে, শ্মশানে ‘নো এন্ট্রি’

Written by SNS June 19, 2023 7:04 pm

দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আবহাওয়া অনেকটাই সহনীয় হয়েছে সোমবার। রবিবার ওই সব এলাকায় ভাল পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের পূর্ব ও মধ্য এলাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। বিশেষ করে পূর্বভাগে তাপপ্রবাহে রীতিমতো মহামারী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অন্তত শশ্মান কবর স্থানের দৃশ্য সেই পরিস্থিতিই মনে করাচ্ছে।

করোনা মহামারীর সময়ে দেহ অন্তেষ্টি করতে যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হত, পূর্ব উত্তরপ্রদেশের বারাণসী, বালিয়া, মউ এবং বিহারের সারণ, ছাপড়া এলাকার পরিস্থিতি তাই। শ্মশানঘাট, কবরস্থানে মরদেহ নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে স্বজনদের। বালিয়া, মউয়ের পরিস্থিতি এমন যে জেলা সদর হাসপাতালে গড়ে ঘণ্টায় একজন করে লু আক্রান্ত রোগী মারা যাচ্ছেন। স্মরণকালের মধ্যে এমন পরিস্থিতির কথা কেউ মনে করতে পারছেন না। বাড়িতে দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকা মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

মউ জেলার দোহড়িঘাটের মুক্তিধাম শ্মশানঘাট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন অন্যান্য বছর এই সময় দিনে গড় ১২টি শব দাহ হয়েছে সেখানে। এবার সংখ্যাটা ৫০-এ পৌঁছে গিয়েছে। শ্মশানঘাটের মুখ্য পরিচালক গুলাবচাঁদ গুপ্তা বলেন, রবিবার অকল্পনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। একশোটি দেহ দাহ করতে হয়। প্রশাসনকে বলা হয়েছে, মৃতদের অন্যান্য শ্মশানে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। সরকারিভাবে ‘নো এন্টি’ বোর্ড টাঙানো না হলেও পরিস্থিতি তাই। অনেক পরিবার গাড়ি ঘুরিয়ে ফাঁকা শ্মশানের খোঁজে ছুটছেন।

আর একটি শ্মশান ঘাটের কর্তা জানান, ২০২০-তে করোনা মহামারীর সময়েও দিনে সর্বোচ্চ ৫০টি দেহ দাহ করা হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যাও ছাপিয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে অপেক্ষা করতে না পেরে স্বজনেরা অস্থায়ী শ্মশান বানিয়ে সেখানে দেহ দাহ করছেন।

এরই মধ্যে তাপপ্রবাহে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সরকারি বয়ান ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সরকার এত মৃত্যুর কারণ তাপপ্রবাহ বলে মানতে নারাজ। বালিয়া জেলার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যু লু’র কারণে বলে সরকারিভাবে দাবি করা হয়েছে। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিবাকর সিং রবিবার ৩৪ জন হিট স্ট্রোকে মারা গিয়েছেন বলে সরকারিভাবে ঘোষণা করেন। উত্তরপ্রদেশ সরকার রাতেই তাঁকে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। তবে সরকার মেনে নিয়েছে, শুধু সরকারি হাসপাতালেই প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর একজন করে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত মানুষ ভর্তি হচ্ছেন।