ভোটের মুখে 0গেহলট-পাইলট কোন্দল মেটাতে নাজেহাল কংগ্রেসে

Written by Sunita Das October 28, 2023 5:11 pm

জয়পুর, ২৮ অক্টোবর– দোরগোড়ায় দাড়িয়ে বিধানসভা নির্বাচন৷ এই সময় গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত কংগ্রেস৷ রাজস্থানে রীতিমতো দলের দুই মুখ্য নেতার কোন্দল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দল৷ বৃদ্ধ রাজপুত অশোক গেহলট, তরুণ তুর্কি শচীন পাইলটের দ্বন্দ্ব আজ আর কোনও নতুন কথা নয়৷ যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য না এলে যে, মরুঝডে় ডুবতে হবে, তা বুঝতে ভুল করেননি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে৷ তাই দায়িত্ব পাওয়ার পরই বারেবারে দুই হেভিওয়েট নেতার সঙ্গে সমানে কথা বলে কোন্দল মেটানোর চেষ্টা করেছেন৷ মাসখানেক আগেও আলাদা আলাদাভাবে দুই নেতাকে বলেছেন, আগে কাঁধ কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে নির্বাচনে জিতুন৷ পরেরটা পরে হবে৷
সাংগঠনিক পদের হিসাবে দলের সর্বাধিনায়কের এই আবেদন যে আসলে আদেশ, তা ভালই বুঝেছিলেন গেহলট-পাইলট৷ তাই ইগোর উপর আপাতত বালি চাপা দিয়েই আসরে নেমেছিলেন তাঁরা৷ কিন্ত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে প্রার্থী নির্বাচনে শচীনকে বেশ কিছু জায়গায় অপদস্থ করেছেন অশোক৷ তাতেই যেন ফের প্রকাশ্যে রাজস্থান কংগ্রেসের ফাটল৷ কামাঁ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজস্থানের শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও কারিগরী দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জাহিদা খানের সঙ্গে জডি়য়েছে দুর্নীতির নাম৷ সম্প্রতি তাঁর বাডি়র সামনে এক আবর্জনা স্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে ব্যাঙ্কের নোট বান্ডিল করার বিপুল সংখ্যক টেপ, টাকা জমা করার রসিদ৷ বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে গেহলট ঘনিষ্ঠ নেত্রীর বিরুদ্ধে৷ গত কয়েকদিন ধরেই কংগ্রেসের সদর দফতরের সামনে জাহিদার বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কয়েকজন৷ তাঁদের বক্তব্য, দুর্নীতিতে জডি়ত জাহিদাকে প্রার্থী করা যাবে না৷ শুক্রবার হঠাৎ করেই ২৪, আকবর রোডে জমায়েত হন জাহিদাপন্থীরা৷ কামাঁ কেন্দ্র থেকে জাহিদাকেই প্রার্থী করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা৷ একটা সময় কংগ্রেস সদর দপ্তরের সামনের লনের দু’দিকে জাহিদা সমর্থক ও বিরোধীদের জিন্দাবাদ-মুর্দাবাদ স্লোগানে কান পাতা দায় হয়ে দাঁড়ায়৷
এখানেই থামেনি দ্বন্দ্ব৷ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকবর রোডে জড়ো হন জয়পুরের মালব্য নগর কেন্দ্রের কিছু কংগ্রেস সমর্থক৷ তাঁদের দাবি, অর্চনা শর্মার বদলে সেখান থেকে প্রার্থী করতে হবে মহেশ শর্মাকে৷ যুক্তি, গত দু’বার এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও বিজেপির কাছে ভরাডুবি হয়েছে অর্চনার৷ সেখানে গত কয়েকবছর মাটি কামডে় এলাকায় সংগঠনকে মজবুত করেছেন মহেশ৷ তাই দু’বারের হেরো প্রার্থীর বদলে তাঁকেই প্রার্থী করতে হবে৷ কংগ্রেস অন্দরমহলের বক্তব্য, শচীন পাইলটও চেয়েছিলেন এমনটা৷ কিন্ত্ত এখানেও নিজের অনুগত অর্চনাকে প্রার্থী করিয়ে ছেডে়ছেন গেহলট৷ কংগ্রেস হাইকমান্ড বারবার বলে এসেছে, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কার জেতার সুযোগ কতখানি, তা দেখা হয়েছে৷ কিন্ত্ত পাইলটপন্থীদের দাবি, অর্চনার থেকে এই বিষয়ে এগিয়ে মহেশ৷ কারণ দু’দিন আগেই নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে কেঁদে ভাসিয়েছেন অর্চনা৷ তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “এবারও যদি হারি, আমার রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে৷ তাই আপনারা জানপ্রাণ লাগিয়ে দিন৷”