স্কুলের ছাদ থেকে পড়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু 

কলকাতা, ৪ সেপ্টেম্বর –  কসবার স্কুলের ছাদ থেকে পড়ে দশম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, রথতলার সিলভার পয়েন্ট স্কুলের ওই ছাত্রের ক্লাস ছিল স্কুলের ৫ তলার একটি ঘরে। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে ৬ তলার ছাদে উঠে গিয়েছিল সে। স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজেও নাকি ৬ তলার করিডোরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে ওই ছাত্রকে। তারপরেই কি সে ঝাঁপ দিয়েছিল ছাদ থেকে? সেই প্রশ্নই উঠছে।

সূত্রের খবর, এদিন জীবন বিজ্ঞানের একটি প্রজেক্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল ওই ছাত্রের। কিন্তু সে তা দিতে পারেনি। সেই কারণে ওই ছাত্রকে বকাবকি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তার বাড়ির লোকজন। তাহলে কি সেই কারণেই ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল সে? মৃত পড়ুয়ার বাড়ির লোকজন স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। তার বাবা জানিয়েছেন, করোনা পর্বে স্কুলের বেতন কমানো নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন তিনি। অভিভাবকদের একত্রিত করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর চাপের মুখে ৩৩ শতাংশ বেতন কমাতে বাধ্য হয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু এই ঘটনার পর তাঁকে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকী, প্রিন্সিপাল নিজে এ ব্যাপারে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। সেই রাগ থেকেই ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃত পড়ুয়ার বাবা। এমনকী, দুই শিক্ষিকা মিলে তাঁর ও তাঁর ছেলেকে ছাদে নিয়ে গিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, পরে ছেলের বন্ধু নীচে নেমে আসে। তারপরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।


সূত্রের খবর, স্কুলের ৬ তলায় একটি ক্লাসরুম রয়েছে। তার পাশেই চলছে নির্মাণকাজ। এদিন ওই ছাত্র দুপুর ২.৩০ নাগাদ ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পর বাড়িতে কিছু না জানিয়েই তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারও দু ঘণ্টা পর স্কুলের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। কেন এতক্ষণ দেরি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

মৃতের পরিবারের দাবি, ছেলের শরীরের একটাও হাড় ভাঙেনি। কান ও মুখে ছিল রক্তের চিহ্ন। ওই পড়ুয়ার বাবার প্রশ্ন, ৫ তলা থেকে নীচে পড়ার পরেও কীভাবে হাড় না ভাঙা সম্ভব? ছেলেকে স্কুলের তরফেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তবে ঘটনায় মৃত ছাত্রের পরিবারের তরফে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই জানা গেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। ওই ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তারপরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।