টানা ১২ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার, কালীঘাটের কাকু’কে  ১৪ দিন হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে ইডি 

কলকাতা , ৩১ মে – দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ, টানা ১২ ঘণ্টা জেরা, বাড়ি  ও অফিসে বারংবার তল্লাশির পর ইডির হাতে গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তে অসহযোগিতা, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির অসামঞ্জস্য-সহ তথ্যে গোপনীয়তার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গোপাল দলপতি থেকে শুরু করে তাপস মণ্ডলের মুখে শোনা যায় ‘কালীঘাটের কাকু’ সম্বোধন। কুন্তলের মুখেও শোনা যায় এই নাম। পরে তাপসই বলেন কালিঘাটের কাকুর নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। 
ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম কিং পিন সুজয়কৃ্ষ্ণ ভদ্র । তাঁর মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা হয়েছে। আদালতের বাইরে তাপস সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘সুজয়ের কাছে এজেন্টদের তালিকা ও টাকা পৌঁছে যেত।’তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। মঙ্গলবার ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার আগেও তিনি জোর গলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।    
আগে ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলে দাবি করেন, ‘তাপস মণ্ডলকে চিনি না। কালীঘাটের কেন বলা হচ্ছে তাও আমার জানা নেই। টিভিতে দেখেছি। আমার কাছে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা কী ভাবে আসবে? আমার নিজের মেজদার মেয়ে এমএ-বিএড। তার কোনও চাকরি হয়নি। আমার নিজের একমাত্র মেয়ে, টেট পরীক্ষা দিয়েছিল, কিন্তু চাকরি হয়নি। আমার ক্ষমতা থাকলে আমার মেয়ে, দাদার মেয়ের চাকরি হত না ?  দাদার মেয়ের তো সব যোগ্যতাই ছিল। তিনি আরও বলেন , ‘আমার সাহেবকে পৃথিবীর কারও ক্ষমতা নেই ছুঁতে পারবে।  আমার সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কী চেষ্টা হচ্ছে আপনারা বুঝবেন। তাই আমার কাছ অবধি এসে থেমে যেতে হচ্ছে। আমি অভিষেকের অফিসে চাকরি করি, ২০০৯ সাল থেকে আছি।’
মঙ্গলবার সকাল ১১ টা  নাগাদ CGO কমপ্লেক্সে ঢোকার সময় সুজয়কৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘বেরিয়ে এসে কথা বলব। সবরকম ভাবে সহযোগিতা করব।’ ইডি সূত্রে খবর,  দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত এবং অভিযুক্তদের বক্তব্য তুলে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কাকুকে । কিন্তু বেশ কিছু  প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। এমনকি মোবাইল ফোনে তাঁর সামনে বহু তথ্য তুলে ধরা হলেও, তিনি মানতে অস্বীকার করেন। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁকে জেরা করে জরুরি অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আগেই কালীঘাটের কাকুর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। সেখানেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওযা গিয়েছে।  
 জানা গিয়েছে, বুধবার মেডিক্যাল টেস্টের পর সুজয়কৃ্ষ্ণকে আদালতে তোলা হবে। ১৪ দিন হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানাবে ইডি । এদিন তাঁকে জোকা ইএসআই -হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।