এরা প্রত্যেকেই সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতদের সম্পর্কে উক্তি সরকারি আইনজীবীর 

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Photo:Facebook@jadavpuruniversity) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (Photo: Facebook@UniversityCalcutta)

কলকাতা, ১৯ আগস্ট – যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার মোট ১২ জন। এরমধ্যে শুক্রবার রাতে তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক অভিযুক্তদের আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার আলিপুর আদালতে সরকারি আইনজীবীরা বলেন, ‘সবাই মিলে পরিকল্পনা করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে খুন করেছে। এক এক করে যারা ধরা পড়ছে, তারা অপরাধী হিসাবে সফল। কিন্তু অভিনেতা হিসাবে ব্যর্থ। শুক্রবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র শেখ নাসিম আখতার, গণিত বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র  হিমাংশু কর্মকার এবং কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সত্যব্রত রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।  ’  শুক্রবার এই তিনজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল পুলিশ। সূত্রের খবর, তিনজনের বয়ানেই বিস্তর অসঙ্গতি মেলে। এরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, এই তিনজনই ঘটনার সময় হোস্টেলে উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতার হওয়া তিনজনের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা সওয়ালে জানান, সাক্ষী হিসাবে ডেকে এই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ যাকে পারছে, তাকেই গ্রেফতার করে নিচ্ছে বলে দাবি ওই আইনজীবীদের।  আদালতে বলেন, ‘মোবাইল ছাড়া তাদের কাছ থেকে আর কিছুই নেয়নি পুলিশ। তবুও কেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হল, সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।’ এ ভাবে চললে সকলকেই গ্রেফতার করতে হবে বলেও জানান তাঁরা। একই সঙ্গে এই পড়ুয়াদের মেধা এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার দিকটিও আদালতে তুলে ধরা হয়েছে।

ধৃত সত্যব্রতের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁকে যখনই ডাকা হয়েছে, তখনই হাজিরা দিয়েছেন। নাসিম ঘটনার পর বাড়ি চলে যান। তাঁর আইনজীবী জানান, সম্প্রতি তাঁর দাদু মারা গিয়েছেন। সেই কারণেই নাসিমকে বাড়ি যেতে হয়েছিল। ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন আইনজীবী। কিন্তু দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।


শুক্রবার রাতে ধৃত তিন পড়ুয়াকে শনিবার আদালতে হাজির করানো হলে পুলিশের তরফে জানানো হয়, ধৃতেরা তদন্তকে বিপথে চালনা করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ‘সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা’ বলে উল্লেখ করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। তাঁর দাবি, ধৃতেরা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। তদন্তের অভিমুখ বদলাতে চাইছেন এই তিন অভিযুক্ত।