• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

স্বাভাবিক হচ্ছে কেন্দ্রীয় দফতরের কাজকর্ম, হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের আবাসনের গেটের তালা ভেঙে দিলো পুলিশ

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে তাঁর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির সরকারি বাসভবন পূর্বিতা-তে গৃহবন্দি করে রেখেছে ছাত্রছাত্রীরা।

বিশ্বভারতীর সামনে আন্দোলনরত ছাত্ররা (Photo:SNS)

পড়ুয়া এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মধ্যে যে টানাপােড়েন শুরু হয়েছে তা এখনও অব্যাহত। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযােগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তিন পড়ুয়াকে তিন বছরের জন্য সাসপেণ্ড করার পরিপ্রেক্ষিতে, সেই সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে, ২৭ আগস্ট রাত্রি ৮ টা থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে তাঁর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির সরকারি বাসভবন পূর্বিতা-তে গৃহবন্দি করে রেখেছে ছাত্রছাত্রীরা।

ওই বাসভবনে তিনি পব্বিারের সদস্যদের নিয়েই গৃহুন্দি অবস্থায় রয়েছেন। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ এবং গণ সংগঠন আন্দোলনরত পড়াদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ৩ সেপ্টেম্বর নবান্ন থেকে বীরভূম জেলার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সাথে ভার্চুয়াল কথপােকথনের সময় আক্ষেপের সুরে জানিয়েছেন যে, শান্তিনিকেতন আমাদের গর্বে জায়গা ছিলাে, এখন সেখানে প্রবলেম হচ্ছে।

Advertisement

এদিকে ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট যে অন্তর্বর্তী রায় দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে, উপাচার্যের বাসভবনের ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও অবস্থান করা যাবে না, লাউডস্পিকার ব্যবহার করা যাবে না। তিনজন পুলিশ কর্মীকে উপাচার্যের বাড়িতে মােতায়েন করতে হবে।

Advertisement

এই মামলার পব্বর্তী শুনানি হবে ৮ সেপ্টেম্বর। শান্তিনিকেতন থানার তিনজন পুলিশ কর্মী ইতিমধ্যেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়িতে পৌঁছেগিয়েছে। এদিকে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা বলছেন, হাইকোর্টের রায়ের কপি দেখ তাঁদের আইনজীবি প্রয়ােজনীয় সিদ্ধান্ত নিবেন। তাঁরা যা জেনেছেন তাতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। তাঁরা আদালতের রায় মেনেই চলবেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের বাড়ি থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে বসেই তাঁরা আন্দোলন করবেন।

তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করার কোনও প্রশ্নই আসছে না বলে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। উপাচার্যের বাসভবন পূর্তিার সামনে থেকে রাস্তাটি তিন দিকে গিয়েছে। আর এই তিন দিকের রাস্তা ৫০ মিটার পর থেক অবরুদ্ধ করে দিলে, উপাচার্যের পক্ষে কোনওভাবেই বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে বিশ্বভারতীর কর্মীদের বেতন ও অবসর প্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন ইংরেজি মাসের শেষ তারিখে দেওয়া হয়ে থাকে। তা ওই সময় আটকে থাকলেও, বর্তমানে কর্মীরা দফতরে যাওয়ার ফলে কর্মীদের বেতন ও পেনশনের টাকা সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশর কপি হাতে আসার পরই সেই কপি হাতে নিয়েই বােলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক রায়, বােলপুরের মহকুমা শাসক অয়ন নাথ বিশাল পুলিশ বাহিনী, বিশ্বভারতীর বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে পৌঁছে যান উপাচার্যের পূর্বিত বাড়ির সামনে। সে

খানে তিনি মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে সকলকে অবহিত করে, উপাচার্যের সরকারি বাসভবনের গেটে যে তালা দেওয়া ছিলাে, সেই তালা কে দিয়েছেন এবং কারও কাছে তার চাবি আছে কী না, তা জানতে চান। কিন্তু কারও কাছ থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকরা কোনও জবাব পাননি।

এরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে লােহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে সেই ভেঙে দেওয়া হয় এবং গেটের সামনে যে সব পােস্টার দেওয়া ছিলাে তা ছিড়ে দেওয়া হয়। কাঠের তক্তপােশ দিয়ে গেটের যে অংশ আটকে রাখা হয়েছিলাে তাও সরিয়ে দিয়ে এলাকাটি অবরােধ মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারী পড়ুয়া জানিয়েছেন, তাঁরা সমগ্র বিষয়টি পর্যালােচনা দেখবেন আদালতের নির্দেৰ্শর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। তারপর তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন। তবে, তাঁরা যে এই আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসনে না, তাও জোরের সাথে জানিয়েছেন।

Advertisement