আমি এতটা কঠোর হতে পারিনি, বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

Written by SNS April 23, 2024 3:03 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি— সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী৷ তবে চাকরিতে বহাল থাকেছেন ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস৷ মানবিক কারণে তাঁর চাকরি বহাল রাখছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷ এদিন শুনানি শেষে কারও মুখে ফুটলো আনন্দের হাসি আবার কারও চোখে মুখে ঘনিয়ে এল দুর্যোগের কালো মেঘ৷ তার কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে  তাঁরা যে শুধু চাকরি হারালেন তা নয়৷ পাশাপাশি, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণদের বার্ষিক ১২ শতাংশ সুদের সঙ্গে এতদিন যাবৎ প্রাপ্ত মাইনেও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ৷ সেই টাকা আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হল জেলাশাসকদের৷

তবে এতকিছুর পরে চুপ থাকেননি রাজ্যের যোগ্য চাকরি প্রাপকদের ‘ভগবান’ তথা সদ্য রাজনীতিতে যোগ দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ এদিন আদালতের রায়কে স্বাগত জানালেন তিনি৷ অভিজিতের কথায়, ‘‘আদালত যোগ্য রায় দিয়েছে৷ এই রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি৷ তবে আজ আমাদের আনন্দের দিন নয়, রাজ্যবাসী এখনও ‘জোচ্চুরি’র শিকার৷’’

পাশাপাশি, ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে কঠোর বলেও উল্লেখ করেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁর বক্তব্য, ‘ডিভিশন বেঞ্চ আমার থেকেও কঠোর রায় দিয়েছে৷ আমি এতটা কঠোর হতে পারিনি৷’ বিচারপতি প্রার্থীর আরও সংযোজন, ‘যোগ্য প্রার্থীরা বহুদিন ধরে বঞ্চিত, আশা করব রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য ব্যবস্থা করবে৷’

এখানেই শেষ নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতেও সরব হন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ অন্যদিকে রাজ্যের নির্বাচন রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে হওয়া উচিত বলেও কটাক্ষ করেন তিনি৷ যদিও রায়গঞ্জের সভা থেকে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ এদিন তিনি বলেন, ‘আমরা চাকরি দিচ্ছি আর আপনারা আইনের খোঁচায় চাকরি কেড়ে নিচ্ছেন৷’ পাশাপশি, কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার কথাও জানান তিনি৷ মমতার আরও সংযোজন, ‘কেউ পাশে না থাকলেও চিন্তা করবেন না আমরা পাশে আছি৷ ১০ লক্ষ চাকরি তৈরি৷’ একই সঙ্গে রায়গঞ্জের সভা থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া স্বেচ্ছাবসর প্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল সুপ্রিমো৷

প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রথম থেকেই রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যয়৷ তাঁর নির্দেশে মতো ৮১৬১ জনের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ পরে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য৷ কিন্ত্ত শেষ পর্যম্ত রাজ্য সরকার ধাক্কা খায় দেশের শীর্ষ আদালতেও৷ কলকাতা হাইকোর্টের কাছে ফের ফিরে আসে সেই মামলা৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, মে মাসের মধ্যে মামলার রায় ঘোষণা করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চকে৷ আর সেই বিশেষ বেঞ্চের শুনানিতেই চাকরি হারালেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন৷ পাশাপাশি, প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে যারা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ বার্ষিক সুদের হারে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের৷