আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ১৫ মে– ১৮১৮ সালের ১৫ মে বাঙ্গাল গেজেটি নামে দেশের মধ্যে প্রথম বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশ করেছিলেন গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য৷ পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী ২ নং ব্লকের পীলা অ|ঞ্চলের বহড়া গ্রামে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের জন্মভিটে৷ গঙ্গাকিশোরের জন্ম তারিখ না জানার জন্য সংবাদপত্রের তারিখ হিসেবেই ১৫ মে প্রতিবছর গঙ্গাকিশোরকে স্মরন করা হয় তাঁর জন্ম ভিটেয়৷ তিনি তার প্রেস খুলেছিলেন পূর্বস্থলীর বহড়া গ্রামে৷ তাই এই স্থানটির নামকরণ হয় ‘ছাপাখানা ডাঙ্গা’৷ বুধবার সেখানেই সাংবাদিক, লেখক, গুনিজনদের উদ্যোগে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷
গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের এই ছাপাখানা থেকেই একটা সময় প্রকাশিত রায় গুনাকর ভারত চন্দ্রের অম্নদামঙ্গল৷ তার লেখা বইগুলো হলে এ গ্রামার ইন ইংলিশ এন্ড বেঙ্গলি, দায়ভাগ, গঙ্গা ভক্তিতরঙ্গিনী, চিকিৎসার্নব, দ্রব্যগুণ, লক্ষ্মীচরিত্র, চাণক্য শ্লোক৷ কবি ও লেখক পুলক মন্ডল লিখেছেন, ‘উপেক্ষিত নায়ক গঙ্গাকিশোর’৷ এই বইটি গত বছর প্রকাশ পায় কলকাতা প্রেসক্লাবে৷ গঙ্গাকিশোর সম্পর্কে অনেক অজানা কথা এই বইটি থেকে জানা যাবে৷ ১৯৭৫ সালে দক্ষিনারঞ্জন বসু, দাশরথি তা এবং কাটোয়ার কয়েকজন গুণী মানুষ এই মহান ব্যাক্তির স্মরণ অনুষ্ঠানটি সূচনা করেন৷ সেই থেকে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে আসছে৷
বুধবারও এখানে গঙ্গাকিশোর স্মৃতিরক্ষা কমিটি ও পূর্বস্থলী ২ নং ব্লক, এখানকার পঞ্চায়েত মিলে এই অনুষ্ঠান করে৷ পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, পীলা পঞ্চায়েত প্রধান অলোক ঘোষ, গঙ্গাকিশোর স্মৃতিরক্ষা কমিটির দ্বারকানাথ দাস, সৈয়দ আবু জাফর, কালনা সাহিত্য মজলিশের সম্পাদক চন্দন দত্ত, লেখক পুলক মন্ডল গঙ্গাকিশোরের কাজ, তার জীবনচর্যা নিয়ে আলোচনা করেন৷ এখানে গঙ্গাকিশোরের জন্ম ভিটায় রয়েছে একটি প্রাচীন শিবমন্দির ও কালী মন্দির৷ এখানে এখনও নিত্য পুজো হয়৷ বিধায়ক তহবিলের অর্থে এখানে একটি পাকা ঘর নির্মাণ হয়েছে৷ এই ঘরে গঙ্গাকিশোরের লেখা বই এবং অন্য বই এর একটি পাঠাগার করার দাবি উঠেছে৷ শৌচালয়, পানীয় জলের ব্যাবস্থার কথাও এই সভায় ওঠে৷ এখানেই অবশ্য গঙ্গাকিশোরের নামে প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে৷ কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড ও বর্ধমান প্রেসক্লাব গঙ্গাকিশোরের নামে হয়েছে৷ নতুন প্রজন্ম গঙ্গাকিশোরকে যেন আরও জানতে পারে, ভুলে না যায় তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ারও দাবি উঠে আসে এই স্মরণ অনুষ্ঠানে৷