• facebook
  • twitter
Thursday, 31 July, 2025

ঐতিহ্যের সাক্ষী ‘আড়িয়াদহ অ্যাসোসিয়েশন লাইব্রেরি’

বাংলার শতাব্দী প্রাচীন গ্ৰন্থগারগুলোর মধ্যে অন্যতম সরকার অনুমোদিত শতাব্দী প্রাচীন গ্রন্থাগার আড়িয়াদহ এ্যাসোসিয়েশন লাইব্রেরী এ্যান্ড লিটারারী ক্লাব।

জনশিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে লাইব্রেরী বা গ্রন্থাগার হল জ্ঞান ও তথ্যের ভান্ডার। যেখানে বই, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র এবং অন্যান্য তথ্যমূলক সামগ্রী সংরক্ষিত থাকে। যা পাঠকদের জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দেয়। আধুনিক সমাজ জীবনে বিশ্বায়নের দাপটে যতই উন্নত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট আসুক না কেন লাইব্রেরীর প্রয়োজনীয়তা ও তার অবদান সম্পর্কে কারও কোন সন্দেহ প্রকাশের অবকাশ নেই। লাইব্রেরী হারিয়ে গেলে যে শুধু কিছু বই হারাবে তা নয় , হারিয়ে যাবে আমাদের ইতিহাসের অনেক অংশ।

বাংলার শতাব্দী প্রাচীন গ্ৰন্থগারগুলোর মধ্যে অন্যতম সরকার অনুমোদিত শতাব্দী প্রাচীন গ্রন্থাগার আড়িয়াদহ এ্যাসোসিয়েশন লাইব্রেরী এ্যান্ড লিটারারী ক্লাব। ১৯ শতকে বাংলার নবজাগরণ বা রেনেসাঁর ঢেউ আছড়ে পড়েছিল আড়িয়াদহের বুকে। এলাকার মানুষকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে এগিয়ে এসেছিলেন এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষ মহাদেব ঘোষাল ও আরও বিশিষ্ট মানুষরা। যাদের উদ্যোগে ১৮৭০ সালে আড়িয়াদহের দিল্লী পাড়ায় মহাদেব ঘোষালের বৈঠকখানায় বেশ কিছু বই নিয়ে পথ চলা শুরু হয় আড়িয়াদহ এ্যাসোসিয়েশন লাইব্রেরীর। পরবর্তী সময়ে নানান ঘটনা প্রবাহ অতিক্রম করে ফিডার রোডে লাইব্রেরীর নতুন ভবন গড়ে ওঠে। একাজে এগিয়ে এসেছিলেন আড়িয়াদহের গর্ব ব্যোমকেশ চট্টোপাধ্যায় ও সত্যচরণ চট্টোপাধ্যায়। তারা লাইব্রেরীর জন্য জমি দান করেন। সেখানেই নতুন ভবনের নাম হয় ‘সুখদা মেমোরিয়াল হল’।

এছাড়াও লাইব্রেরীর উল্লেখ্য ভবন ও কক্ষের মধ্যে রয়েছে মহাদেব ঘোষাল ভবন, সুখোদা মেমোরিয়াল হল, বিনয় মেমোরিয়াল হল, সুবোধ রায় স্মৃতি কক্ষ, হরিনাথ দে সভাকক্ষ, অরুণ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি কক্ষ। সার্ধ শতবর্ষ অতিক্রান্ত এই লাইব্রেরী বহু মনীষী ও শিক্ষানুরাগী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পদধূলিতে ধন্য। এ যেন এক শিক্ষা মন্দির। কথা হল লাইব্রেরী ইনচার্জ তথাগত চৌধুরীর সাথে। তিনি বলেন প্রায় ২২ হাজার বই দিয়ে সাজানো এই লাইব্রেরী। যার মধ্যে আছে বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য পুঁথি ও বই। আছে একাধিক পত্রপত্রিকা ও শি‌শু বিভাগ। রয়েছে রিডিং রুম ও ছাপানো ক্যাটালগ। শতাব্দী প্রাচীন এই লাইব্রেরীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা একান্ত দরকার আছে বলে তিনি জানান।