জেট সংকট

২৫ বছরের পুরনো এই সংস্থার বন্ধ হয়ে যাওয়াকে সরকারিভাবে ‘সাময়িক’ বলা হলেও কোনও ইতিবাচক উদ্যোগের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না

Written by SNS Kolkata | April 20, 2019 8:03 am

জেট এয়ারোয়েজ(ছবি- ফেসবুক)

জেট এয়ারওয়েজ যখন বুধবার সন্ধ্যায় অন্ধকারে প্রবেশ করল তখন একমাত্র গ্রামীণ নির্বোধ বা অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের পদস্থ অফিসাররা ছাড়া কেউই বিস্মিত হয়নি।দুঃখের বিষয় হল ২৫ বছরের পুরনো এই সংস্থার বন্ধ হয়ে যাওয়াকে সরকারিভাবে ‘সাময়িক’ বলা হলেও বেশিরভাগ বিশেজ্ঞ্ই মনে করছেন যে সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে কোনও ইতিবাচক উদ্যোগের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত ব্যাঙ্কগুলির একটি কনসর্টিয়াম যখন এই অবরুদ্ধ বিমান সংস্থার পরিত্রাণের জন্য ১৫০০কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি দিতে পারল না এবং ৪০০ কোটি টাকার জরুরি সাহায্যও যখন প্রত্যাখ্যাত হল তখন কার্যত লাল পতাকা উড়িয়ে দেওয়াই হল।জেট সঙ্কটের জন্য ২০হাজার কর্মী ও তাঁদের পরিবার ঘোর আর্থিক অসুবিধার মধ্যে পড়তে পারে-এই বিষয়টি ব্যাঙ্কিং সেক্টরের কাছে কোনও গুরুত্ব পায়নি।পূর্বতন সরকারের চাপে ঋণ দিয়ে ব্যাঙ্কগুলি  অনুৎপাদক সম্পদ বেড়ে যাওয়ায় তাদের মাথার উপর একটা রাজনৈতিক হাতুড়ি চেপে বসে আছে।অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে ব্যাঙ্কগুলি সাবধান হয়েছে।জোরের সঙ্গে এই যুক্তি দেখানো যায় যে কোনও বাণিজ্যিক সংস্থার হার খারাপ হয়ে গেলে তাকে উদ্ধার করা সরকারের কাজ ন্য।কিন্তু এনডিএ সরকার যখন এ ব্যাপারে জড়িত হওয়ার পথই বেছে নিল তখন পিএমও-পর্যায়ে কয়েকটি নিষ্ফলা বৈঠকের পর ওই সংস্থাকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়ার চেয়ে বেশি কিছু করতে পারত,এটা পরিষ্কার যে সরকার এ ব্যাপারে ‘আগ্রহ’ দেখানোয় সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা দূরে সরে আছে।একটা আগ্রহ প্রকাশের আগে হয়ত আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।সেই পর্যন্ত যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতেই হবে।জেটের পরিষেবা না থাকায় বিমানযাত্রার জগতে একটা বড় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে এবং ন্যায্য বিমান সংস্থার টিকিটের দাম চড়চড় করে বাড়ছে।সুরেশ প্রভু ও তাঁর অফিসাররা ফতোয়া দিতে পারেন, হুমকি দিতে পারেন,কিন্তু যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর ব্যাপারে তাঁরা কিছু করে উঠতে পারেননি।জেটের ডানা গুটিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স বিমানগুলি বসে যাওয়ায় এবং এয়ারবাস এনইও নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে।রাইসিনা হিল যখন বিকাশশীল অর্থনীতির কথা বড়াই করে বলছে তখন বাণিজ্যিক বিমান পরিবহণে অব্যবস্থা অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে উল্লিখিত উন্নয়নের বেলুন চুপসে যেতে পারে।এটা নির্বাচনের ওপর ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।বড় বড় বিমান পরিবহণ সংস্থা ভেঙ্গে পড়ার পর বিমান পরিষেবা বৃদ্ধির দাবি আর সাজে না।

কিছু জঘন্য ব্যবসায়ী বিমান পরিবহণ ব্যবসাকে বেহাল করে ছেড়েছে বলে ধারণা করা হলে সেটা নেহাতই ওপর- ওপর ব্যাপার।এটা জেট সমস্যা সমাধানের কোনও পথ নয়। সংস্থার সমস্যার গভীরে যাওয়ার মতো নৈতিক সাহস দেখাতে হবে, দরকার বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে হবে।একটা সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র খুব সহজেই দেশের উন্নতির বার্তা দিতে পারে বিশ্বকে।কোনো বিশ্বাস ছাড়া রাজনৈতিক স্লোগান আউড়ে সেই কাজ করা যায় না।