• facebook
  • twitter
Saturday, 20 December, 2025

ভারত আজ ঘরে বাইরে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন

প্রাচীন এই দেশে নবীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান রচিত হয়েছিল

ফাইল চিত্র

অচিন রায়

আমাদের ভারতীয় সাধারণতন্ত্র আজ ৭৫ বছর পূর্তির গৌরবে উজ্জ্বল। এই দিনেই ১৯৫০ সালে আমাদের সংবিধান কার্যকরী হয়। এই প্রসঙ্গে একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন। এই যে সংবিধান দ্বারা ভারতীয় শাসনতন্ত্র পরিচালিত হওয়ার নির্দেশ, সেটির প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকর, এটি একেবারেই ভুল ধারণা। কেননা সংবিধান তৈরি করে প্রাক স্বাধীনতা যুগে গঠিত ২৯৯ সদস্য বিশিষ্ট কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অনেক আলোচনা, তর্কবিতর্কের পর অবশেষে ড্রাফটিং কমিটি সংবিধান প্রণয়ন করে। সেই ড্রাফটিং কমিটি-র চেয়ারম্যান ছিলেন ড. আম্বেদকর। এটুকুই তাঁর ভূমিকা। সেখানে তাঁকে সংবিধান রচয়িতারূপে অভিহিত করা একেবারে ভুল।

Advertisement

সাধারণতন্ত্র বা লোকতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেই সংবিধান অনুযায়ী ভারতে কেন্দ্রে ও রাজ্যে সরকার পরিচালিত হয়ে চলেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী পর্যায়ে প্রশাসনের সুবিধার্থে ইতিমধ্যে একের পর এক সংবিধান সংশোধন হয়ে চলেছে। প্রথম সংবিধান হয় প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নির্দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করে। তারপরে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ’প্রিয়েমবেল’ সংশোধনকরে সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান। বহু দলতান্ত্রিক ভারতীয় গণতন্ত্রে কিন্তু সমস্ত দলই এই সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের রাজনৈতিক কাজকর্ম পরিচালিত করে। কিন্তু প্রয়োজনে সংবিধান লঙ্ঘন করা ও সুবিধার্থে সংবিধান সংশোধন করা এখন একটি প্রচলিত রীতি হয়ে উঠেছে। ফলে আমরা ইতিমধেইে সংবিধান সংশোধনে সেঞ্চুরি করে ফেলেছি।

Advertisement

বেআইনিভাবে সংবিধান লঙ্ঘন ও সেই সূত্রে সুবিধামতো সংবিধান সংশোধনের জাজ্বল্যমান প্রমাণ, রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার জন্য সেই রাজ্যের আবাসিক যোগ্যতার পরিবর্তন। কেননা সাংবিধানিক আইন লঙ্ঘন করে বাঙালি প্রণব মুখার্জি, বাংলায় কলকে না পেয়ে গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। অন্যজন পাঞ্জাবি ড. মনমোহন সিং, পাঞ্জাবে প্রতিহত হয়ে অসম থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। সংবিধান লঙ্ঘন করে এই দুই রাজ্যসভার সদস্য প্রণব মুখার্জি পরে হন রাষ্ট্রপতি ও অন্যজন ড. মনমোহন সিং হন প্রধানমন্ত্রী। সাংবিধানিক এই অসুবিধা দূর করার জন্য অবশ্য পরে সংবিধানের বিধান সংশোধন করা হয়।

কিন্তু এত সংশোধন সত্ত্বেও আদালতে অভিযুক্ত ক্রিমিনালদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া এবং ভোট পরবর্তী সুবিধাজনকভাবে দলবদলের আয়ারাম গয়ারামদের, নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সংবিধান সংশোধনে কোনও দলেরই সম্মতি পাওয়া যায়নি। বর্তমানে এই দুটিই আমাদের গণতন্ত্র প্রক্রিয়ার প্রবল সমস্যারূপে চিহ্নিত।

কিন্তু এইরকম কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতা সত্ত্বেও আমাদের লোকতন্ত্রে গৌরবান্বিত অর্জনও কিছু কম নয়। যে সপ্তদশকের কালপরিধিতে মুক্ত দুনিয়ার প্রবক্তা সোভিয়েত রাশিয়ার সাম্রাজ্য আপন অন্তর্নিহিত বিচ্যুতির ফলে ভেঙে খান খান হয়ে যায়; বা প্রতিবেশী ধর্মভিত্তিক পাকিস্তান দ্বিধাবিভক্ত হয়, সেই সময়ের মধ্যেই কিন্তু খণ্ড, ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত বলে কথিত ভারত কিন্তু আপনার রাষ্ট্রিক ঐক্য অটুট রেখে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। গণতান্ত্রিক ভারত, শত্রুর মুখে ছাই ও অনেক বুজুর্গব্যক্তির আশঙ্কা-বাণীকে মিথ্যা প্রমাণ করে কদম কদম বাড়ায়ে যা করে অগ্রসরমান।

গণতান্ত্রিক ভারত পতন-অভ্যুদয় বন্ধুরা পন্থা অতিক্রম করে একটি সুস্থিত লোকতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে দৃঢ় পদবিক্ষেপে ধাবমান। তবে ভবিষ্যতে এই পথে যেমন আছে বিপুল অর্জন, তেমনই আছে আশঙ্কার কথা, ঘরে এবং বাইরে। ঘরে আছে যেমন লুম্পেন রাজনীতির দাপট ও কলঙ্কিত ভোটরাজনীতি, তেমনই বাইরে আছে ভারতকে ধ্বংস করার জন্য উদগ্রীব বৈরী প্রতিবেশীদের চক্রান্ত।

প্রাচীন এই দেশে নবীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান রচিত হয়েছিল। কিন্তু কথার সূক্ষ্ম মারপ্যাঁচে ও কূট কলাকৌশলে সেই সংবিধানকে পদে পদে লঙ্ঘন করাই যেন আমাদের ব্রত হয়ে উঠেছে। যেখানে সংবিধানকে লেটার অ্যান্ড স্পিরিট, উভয়তই মান্য করার কথা, সেখানে দলমত নির্বিশেষে সংবিধানের লিখিত লেটার দিয়ে কী করে তার অন্তর্নিহিত স্পিরিটকে ধ্বংস করা যায়, সেটাই এখন আমাদের সংসদীয় কর্মে সুপ্রতিষ্ঠিত। সংসদের উভয় কক্ষে বারে বারে তারই মহড়া সুপ্রত্যক্ষ।

যে গণতান্ত্রিক সংবিধান দেশের নিরাময় শক্তি হয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপূরক হবে বলে মনে হয়েছিল, সেই গণতন্ত্রই আজ আমাদের গলায় ফাঁস হয়ে চেপে ধরেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ব্যবস্থা, আজ দলতান্ত্রিক অতিচারে প্রহসনে পরিণত। কেননা গণতন্ত্র আজ জঙ্গি দলতান্ত্রিকতার করুণ শিকার। আমাদের সাংবিধানিক তত্ত্বে আছে জনগণই একমাত্র সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সেই জনগণের নির্বোধ ভোটাধিকারের প্রতিফলনে যে ল-মেকারদের নির্বাচিত করার কথা, সেটি আজ জঙ্গি দলতন্ত্রের মারদাঙ্গা রাজনীতির হাতে বন্দি। ফলে লে-ব্রেকাররাই আজ দেশে ল-মেকার। পঞ্চায়েত থেকে সংসদ অবধি এই দাগি আসামিদেরই রাবণরাজত্ব। গণতান্ত্রিক অধিকারে এটিই আজ সবচেয়ে বড় পরিহাসে পরিণত।

তাই দেশে আজ গণতান্ত্রিক রাজনীতি তথা নির্বাচনী রণনীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে মাৎসান্যায়ের, জোর যার মুলুক তার। আসলে একদিনের দাঙ্গায় ভোট প্রক্রিয়াকে কাবু করে সকলকে বোকা বানিয়ে, খাতায়-কলমে নির্বাচনে জয় সাব্যস্ত করতে পারলেই কর্মে ফতে। নির্বাচনে চুরি-জোচ্চুরি, বাটপাড়ি-বদমায়েশি, খুন-রাহাজানি করে যদি গদি দখল করা যায় তাহলেই কেল্লা ফতে। পাঁচ বছরের জন্য অবাধ রাজত্ব। আর যদিই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে কিছু কম পড়ে, তাহলে শুরু হয় আয়ারাম-গয়ারামদের ঘোড়া কেনাবেচার প্রকাশ্য দরদস্তুর, যা শোনপুরের গোহাটাকে হার মানায়। কিন্তু মুখে সবারই গণতন্ত্রের অখণ্ড বুলি। কেননা গণতন্ত্রের নামাবলির আড়ালেই গণতন্ত্রের ধর্ষণটা জমে ভালো। সেক্ষেত্রে বামপন্থী ও দক্ষিণপন্থীতে কোনও ভেদাভেদ নেই। গণতন্ত্রে বিশ্বাস, বিশ্বজুড়ে মার্কসবাদীদের কুষ্টিতে লেখা নেই। কিন্তু ক্ষমতা কায়েম করতে তারাও এখন গণতন্ত্র বলতে অজ্ঞান।

বিশ্বের ঔপনিবেশিক পাশমুক্ত দেশগুলির মধ্যে ভারতে সমস্ত ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও আজও, বুলেট নয় ব্যালটের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হচ্ছে, সেটি নিঃসন্দেহে একটি কৃতিত্বের কথা। পার্শ্ববর্তী অধিকাংশ দেশেই সেই রীতি এখন সুদূরপরাহত। তার কারণ ভারতে গণতান্ত্রিকতার চর্চা শুরু হয়েছিল স্বাধীনতাপ্রাপ্তির অনেক আগে কংগ্রেসের মতো বহু মতের প্ল্যাটফর্মে। বারে বারেই সেখানে সংঘাত এসেছে— আবেদনপন্থী ও আন্দোলনপন্থী, চরমপন্থী ও নরমপন্থী,ব্রিটিশ প্রজাপন্থী ও স্বরাজপন্থী, সোস্যালিস্ট ও বুর্জোয়া এবং সহিংস ও অহিংস। একেকটি মতের নেতৃত্বে ছিলেন বাঘা বাঘা বিদ্বান, বুদ্ধিমান, জ্ঞানবান ও বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। তীব্র মতবিরোধ সত্ত্বেও তাঁরা ঐকমত্যে নেতৃত্বের কথা মেনে নিয়ে অবশেষে একযোগে কাজ করেছেন।

বিশ্বের ইতিহাস প্রমাণ করেছে, গণতন্ত্র ছাড়া আমজনতার স্বাধীনভাবে বাঁচার আর কোনও উপায় নেই। হয় শাসকচক্রের নিষ্পেশণে অধিকারহীন ক্রীতদাসের জীবন অথবা শৃঙ্খলমুক্ত মুক্তমানবজীবন। বলদৃপ্তের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামুক্তির সংগ্রামই মানুষের মুক্তির সংগ্রাম। দলতান্ত্রিক গণতন্ত্রের স্বেচ্ছাচারে জবরদস্তির এই শৃঙ্খলটা থাকে আড়ালে লুকানো।

অধ্যাপক অম্লান দত্ত যখন রাজ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে মেট্রো চ্যানেলে অনশনরত, তখন এক বামপন্থী বিপ্লবী বললেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে’ নির্বাচিত সরকার যেখানে বিরাজমান, সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রশ্ন আসে কোথা থেকে। খুবই কঠিন প্রশ্ন, উত্তর দেওয়া আরও কঠিন। কিন্তু এই মহাজ্ঞানীর ধৃষ্টতা অচিরেই প্রকাশ পেল যখন অধ্যাপক দত্ত অতি সরল ভাষায় গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্দেশ করলেন। একথা স্পষ্ট হল যে, যেনতেনপ্রকারেণ নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতা কায়েম করার নাম গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে কতকগুলি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তির ওপর। তিনি বলেন, যথার্থ গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবে, নিজ নিজ মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে স্বাধীনভাবে মতদানের অধিকার থাকবে এবং সেগুলি রক্ষার্থে আইনের শাসন থাকবে। আইনের নলচে আড়াল দিয়ে দলের বেআইনি শাসনের জোর জবরদস্তিতে মানুষের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটদানের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার, বাঁচার অধিকার পদদলিত করলে সেটা গণতন্ত্র নয়, গণতন্ত্রের ব্যাভিচারমাত্র। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে এই জোর-জবরদস্তি তথা মারদাঙ্গার গণতন্ত্রই চারদিকে জাঁকিয়ে বসেছে।

দেশে আজ গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের লুম্পেন রাজনীতির যে বিকট চেহারা প্রকট তার মূলে যদি কেন্দ্রে হন এশিয়ার মুক্তিসূর্য ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী, তাহলে রাজ্যে সর্বহারার মহান নেতা জ্যোতি বসু। এঁরাই একজোট হয়ে আজ দেশে গণতন্ত্রের নাভিশ্বাস ঘটিয়েছেন। এই লুম্পেন রাজনীতির পাল্লায় পড়লে দেশে গণতন্ত্রের প্রলয়নাচন শুরু হবে কিনা, সেই মহাআশঙ্কা আজ যেন প্রত্যয় হয়ে উঠেছে। এটি হলো ঘরের সমস্যা। তেমনি বাইরে আছে ভারতকে ধ্বংস করার জন্য সক্রিয় বৈরী প্রতিবেশীদের সম্মিলিত চক্রান্ত।

কেননা ভারতবিরোধী চক্রান্তকারী চিন-পাকিস্তানি আঁতাতের সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে সেনা সমর্থিত যে অসাংবিধানিক সরকার ঢাকায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে, তারা নিয়মিত ভারতবিরোধী জিগির তুলে ভারতভঙ্গের খোয়াব দেখছে। ভারতের দিক থেকে কোনও কথা শোনা না গেলেও তারা ভারতের মুখে কথা বসিয়ে রোজ আস্ফালন করে যাচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিসটারস নিয়ে নেওয়ার বা কলকাতা দখলের। পাকিস্তানকে যু্দ্ধ হারিয়ে নব্বই হাজার পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীদের ভারতে নিয়ে এসে, মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে সৃষ্টি করে ভারত চলে আসে। যুদ্ধে জয়ী দেশের এহেন ভূমিকা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ভারত যদি সেই সময় হস্তক্ষেপ না করত, তাহলে বাংলাদেশ আরেকটি ভিয়েতনাম বা ইউক্রেনের মতো সংগ্রামী ধ্বংসের শিকার হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আগ্রাসী রাশিয়ার পূর্ব ইউরোপ দখলের মতো ইচ্ছা থাকলে, ভারত অনায়াসেই সেই সময় বাংলাদেশকে অন্যতম প্রদেশে পরিণত করতে পারত। কিন্তু তা না করে, ভারত রামায়ণী আদর্শধারায় লঙ্কা জয়েরপর যেমন বিভীষণকে রাজত্বে বসিয়ে রাম অযোধ্যায় ফিরে আসেন, তেমনি বাংলাদেশকে স্বাধীন প্রতিবেশী রাষ্ট্ররূপে স্বাগত জানিয়ে প্রায় এক লক্ষ পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীদের দায়িত্ব গ্রহণ করে ভারতে নিয়ে আসে। শুধু এই পাকিস্তানি সৈন্যদের যদি বাংলাদেশে রেখে আসা হতো, তাহলেই বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠার সমূহ সম্ভাবনা ছিল।

নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশ ভারতের সহায়তায় আজ যে সার্বিক উন্নতিতে অনুন্নত দেশ থেকে ডেভলপিং নেশন-এর মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে, সেই কৃতঘ্ন বাংলাদেশ সেকথা বিস্মৃত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি খুন ধর্ষণে কিছুমাত্র ম্রিয়মান না হয়ে আজ তাঁদের হৃতগৌরব পূর্ব পাকিস্তানি পরিচয় ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। পাকিস্তান জিন্দাবাদ করে ভারতের বিরুদ্ধে সক্রিয় হওয়ার জন্যে তারা অত্যন্ত তৎপর। সে বিষয়ে ভারতের বিশেষভাবে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। কেননা কথায় আছে, কুশাঙ্কুর যত ক্ষুদ্রই হোক তার বিদ্ধ করার ক্ষমতা আছে।
তাই আজ এই পঁচাত্তর বর্ষের ক্রান্তি লগ্নে ভারত ঘরে বাইরে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সেই চ্যালেঞ্জকে সার্থকভাবে মোকাবিলা করতে পারাই হবে আমাদের আজকের অঙ্গীকার।

Advertisement