ত্রূুটিপূর্ণ কৌশল

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাদা রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের বেশ কিছু কর্মী এরকম একটা ব্লকবাস্টার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনায় চমকিত হয়ে উঠেছিলেন।কিন্তু সেখানে অজয় রাই নামে একজন স্বল্পপরিচিত নেতা দাঁড় করানাের ফলে প্রিয়াঙ্কা বা রাহুলের কোনও ক্ষতি না হলেও কংগ্রেসের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনায় ভাঁটা পড়েছে।

Written by SNS Kolkata | April 29, 2019 7:15 am

প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা (File Photo: IANS)

জোরের সঙ্গে এই যুক্তি দেখানাে যেতে পারে প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘােষণা করেননি যে তিনি বারাণসী লােকসভা আসনে নরেন্দ্র মােদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন।তাই এই ঘোষণার কোনও প্রয়ােজনই ছিল না যে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন না।গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাদা রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের বেশ কিছু কর্মী এরকম একটা ব্লকবাস্টার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনায় চমকিত হয়ে উঠেছিলেন।কিন্তু সেখানে অজয় রাই নামে একজন স্বল্পপরিচিত নেতা দাঁড় করানাের ফলে প্রিয়াঙ্কা বা রাহুলের কোনও ক্ষতি না হলেও কংগ্রেসের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনায় ভাঁটা পড়েছে।

দলের নেতৃত্ব এতটা অনভিজ্ঞ নয় যে তারা এটা বিশ্বাস করবে এরকম একটা সম্ভাবনাময় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল বিজেপি একেবারে ‘চুরচুর’ হয়ে যাবে।প্রিয়াঙ্কা দাঁড়াবে কি দাঁড়াবেন না তা নিয়ে সাসপেন্স কয়েক বছর আগে তার মাকে ঘিরেও দেখা দিয়েছিল।লােকসভা নির্বাচনটা কোনও ঠাট্টা মশকরার ব্যাপার নয়।তিনি রায়বেরিলিতে মা সােনিয়ার বদলে দাঁড়াবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তার জবাব ”বারাণসী নয় কেন?” এইভাবে অহেতুক জল্পনাকে উস্কে দিয়ে প্রিয়াঙ্কাও নির্বাচনটাকে ঠাট্টার পর্যায়ে নামিয়ে আনেন।এই ধরনের লঘু মনােভাব থেকে দাদা-বােনের রাজনীতির ধরনটা বােঝা যায় চালাক হওয়ার একটা সীমা আছে, কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের এটা তরুণ গান্ধিদের বােঝানাের সাহস নেই যে স্মার্ট হওয়ার চেয়ে বিচক্ষণতা অনেক বেশি জরুরি।

এটা কারুর গভীর চিন্তার মধ্যে আসেনি যে তুলনামুলকভাবে কোনও আনকোরা লোক মােদির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবে।তবে দলের নেতৃত্ব এটা বুঝেছে যে রাফায়েল চুক্তি নিয়ে দিনরাত মন্ত্রজপ করার চেয়ে প্রিয়াঙ্কাকে ঘিরে কোনও নতুন সম্ভাবনায় দলীয় কর্মীরা যথেষ্ট উজ্জীবিত ছিল।বারাণসী সম্পর্কে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে পর্যন্ত এই মনােভাব বজায় ছিল।প্রিয়াঙ্কার বৃহত্তর দায়িত্ব রয়েছে,তাই তাকে একটি আসনে বেঁধে রাখা যায় না বলে এখন যুক্তি দেখানাে হচ্ছে,কিন্তু এটা তাে দলীয় কর্মীদের কাছে আগেই ব্যাখ্যা করা যেত,তাহলে তারা কল্পলােকে বিচরণ করত না।

বারাণসীতে কয়েকটি ছােট বিরােধী দলও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে, কিন্তু তাদের প্রচারে তেমন জোর নেই।এখন প্রশ্নটা হল বারাণসীতে দল পুরােপুরি তার পিছনে নেই এটা জানলে প্রিয়াঙ্কা কি মােদির বিরুদ্ধে একনাগাড়ে কড়া আক্রমণে যেতেন?প্রিয়াঙ্কার পক্ষে একটা ছােট সন্তোষের জায়গা আছে,সেটা হল রাহুল গান্ধি যদি আমেথি ও ওয়েনাড় দুটি আসন থেকেই জেতেন তাহলে তিনি যে আসনটি ছেড়ে দেবেন সেটা প্রিয়াঙ্কার জন্য বরাদ্দ হতে পারে।তবে রাহুল দুটি আসনেই জিতবেন কিনা তা নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ এখন একটা বিশেষ গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।নির্বাচনের ফলাফল ঘােষণার পর প্রিয়াঙ্কার কারণে কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে কতটা ভাল ফল করেছে তা চর্চার মধ্যে চলে আসবে।রাহুল যাকে সাসপেন্স বলেছেন তার জন্য শেষ পর্যন্ত মূল্য দিতেও হতে পারে।প্রিয়াঙ্কা ঠাকুরমার মতাে দেখতে বা তার ক্যারিশমাও একইরকম বলে প্রচার চললেও এ যুগের তীব্র নির্বাচনী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে তা কতটা কার্যকরী তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।