কয়েকমাস আগেই জীবিত মেয়ের ‘শ্রাদ্ধ’ করে খবরের শিরোনামে এসেছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার এক পরিবার। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে। প্রেমের টানে অন্য ধর্মের যুবককে বিয়ে করায় প্রথম বর্ষের ছাত্রীর শ্রাদ্ধ করল পরিবার। কৃষ্ণগঞ্জের খাটুরা উত্তরপাড়ার ঘটনা। শনিবার তরুণীর সমস্ত ছবি, জামাকাপড়, বই ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। রীতিমতো পুরোহিত ডেকে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই ঘটনায় কেউ কেউ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ালেও পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই।
ওই তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাবা কর্মসূত্রে ইজরায়েলে। মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে দাবি করেছে পরিবার। তরুণীর কাকা সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘আগেও মেয়েকে একবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, কিন্তু সে আবার পালিয়ে যায়। এবার আর তাঁকে ক্ষমা করা সম্ভব নয়। পুরোহিত ডেকে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ওর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করেছি। মেয়ে আমাদের ভালোবাসা-সম্মান কিছুই বোঝেনি, আজ থেকে সে আমাদের মেয়ে নয়।’
মেয়ের মা স্বপ্না বিশ্বাস বলেন, ‘মেয়ে ভালোবাসার দাম দিল না। মেয়ে অন্য ধর্মের ছেলের সঙ্গে বিয়ে করেছে। আমাদের বোঝানোর পরও সে মানেনি। তাই তার সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করলাম আজ, সে মারা গিয়েছে আমাদের পরিবার থেকে আজ থেকে। তার জামাকাপড়, ছবি, নথি, বই-খাতা সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর মার্চ মাসে প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে চোপড়ায়। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরিবারের অমতে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন পরিবারের সদস্যরা। গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজনদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মার্চ প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ওই তরুণী। তারপর তাঁরা বিয়েও করেন।