দূষণ আতঙ্কে খড়্গপুরের পাঁচবেড়িয়া-ওয়ালিপুর এলাকায় নির্মীয়মাণ কারখানা বন্ধ করে দিল স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি খড়গপুর জনজাগরণ কমিটি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে কারখানা সরানো না হলে কারখানা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিটি।
পাঁচবেড়িয়া ওয়ালীপুর এলাকায় একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা তাদের সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। খড়্গপুরে দূষণ ছড়াবার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই এই কারখানার বিরুদ্ধে উঠছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা কারখানার এই সম্প্রসারণ প্রকল্পের বিরোধিতা প্রথম থেকেই শুরু করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষদের কথা না শুনে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে কারখানা কর্তৃপক্ষ। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পথসভা করে জনজাগরণ কমিটি।
তারপরে কমিটির তরফে এই কারখানা বন্ধ করার জন্য খড়্গপুরের মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কারখানায় চুল্লি তৈরির কাজ সাময়িক বন্ধ রাখলেও সম্প্রতি আবার সেই কাজ জোর কদমে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে মিছিল করে কারখানা গেটে হাজির হন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা কারখানা চত্বর থেকে কর্মরত ঠিকাকর্মীদের বার করে দেন। তারপরে খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশের উপস্থিতিতে কারখানা গেট বন্ধ করে খড়গপুর জনজাগরণ কমিটির ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
কমিটির সভাপতি প্রাক্তন শিক্ষক মেহেবুব আলী খান বলেন, এর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই এলাকায় কোনও উৎপাদন হবে না। কিন্তু তাঁরা কথার খেলাপ করেছেন। চুল্লি বসানোর কাজ বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে। তাই আমরা চাই প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হোক। যতদিন সমাধান না হবে ততদিন কারখানা বন্ধ রাখা হবে।
কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভাস্কর চৌধুরী বলেন, আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইবো। ওখানে কোনও চুল্লি বসানো হচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।
পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শেখ সাইজাদ বলেন, প্রশাসন যদি আমাদের উপরে গুলি চালায় তারা চালাতে পারে। আমরা গুলি খেতে রাজি আছি কিন্তু স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কালো ধোঁয়া খেতে কোনোভাবেই রাজি নই।
কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান বলেন, স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ কথার খেলাপ করেছে। তারা যদি এই কারখানা তৈরীর কাজ বন্ধ না করে তাহলে সাধারণ মানুষ মাঠে নামবে এবং কারখানা বন্ধ করবে। আজ সেটাই হয়েছে। প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।