বৈশাখী এক উষ্ণ সন্ধ্যায় জি.ডি. বিড়লা সভাঘরে অনুষ্ঠিত হলো নৃত্য ও সংগীতের সন্ধ্যা “দ্য সোজার্ন”। মূল আকর্ষণ যদি হয় নৃত্য, তবে সংগীত ছিল সমানভাবে আকর্ষণীয়। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলেন বিশিষ্ট কত্থক নৃত্যশিল্পী তন্বী চৌধুরী… যার নৃত্য পরিবেশনা ছিল এই সন্ধ্যার আকর্ষণ বিন্দু। তন্নীর পরিকল্পনায় আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোও হয়ে উঠেছিল সমানভাবে মনোজ্ঞ । শুরু হয় ‘বাসা’ কেন্দ্রের ছোট শিক্ষার্থীদের ‘আগুনের পরশমণি’ নৃত্য নিবেদনে। পরিকল্পনা ও পরিচালনা করছেন তন্বী। এই ছোট শিক্ষার্থীদের সম্বর্ধনা দেওয়া হল। এরপর মঞ্চে আসেন তন্বীর নৃত্য শিক্ষাগুরু- গুরু অসীমবন্ধু ভট্টাচার্য ও গুরু অমিতা দত্ত। এদের সম্বর্ধনা প্রদান ও কথার পর ঘটে মূল অনুষ্ঠানে প্রবেশ। এই অংশে নৃত্য প্রস্তুতির (থিমসমৃদ্ধ) এই উপস্থাপনে ছিল তন্বীর নাচ, ভাষ্য পাঠ এবং টোটাল কমপ্লিট একটি উপস্থাপনা। ২৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই নৃত্য প্রস্তুতিতে তন্বীর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলে— সুজয়প্রসাদ চ্যাটার্জী (ভাষ্যপাঠ), অভীক চাকী (বোল-পরন্ত)।
এই পরিবেশনাটির স্ক্রিপ্ট রচনা করেছেন অমিত দাশগুপ্ত, সংগীত আয়োজনে গুরু অসীমবন্ধু ভট্টাচার্য। এরপর তন্বীর অন্যতম গুরু অসীমবন্ধু ভট্টাচার্য একক নৃত্য উপস্থাপনা করেন। পহেলগাঁও হত্যার স্মৃতিকে মনে রেখে ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ গানে শুরু করেন। একে একে চলতে থাকে— উঠান, ঠাট, ধামার তাল যাতে ছিল শিব বন্দনা, তোড়া। বেশ কয়েকটি ধামার কম্পোজিশন পরিবেশন করলন। এরপর তিনি ‘গুলদস্তা’ নামের একটি নৃত্য নির্মিতি উপস্থাপন করলেন। উল্লেখ্য, ওইদিন এটির ছিল কলকাতায় প্রথম উপস্থাপনা। মঞ্চে লাইভ সহযোগীরা ছিলেন- জয়দীপ সিনহা (কন্ঠ), রঞ্জনী ভট্টাচার্য (কন্ঠ), সুনন্দ মুখার্জি (সরোদ), সুবীর ঠাকুর (তবলা), মিঠুন চক্রবর্তী (পাখোয়াজ), দেবাশিষ হালদার (সারেঙ্গী), রূপক (বাঁশী)।
Advertisement
অনুষ্ঠানের অন্তিম পর্বে ছিল যুগলবন্দীর আকর্ষণ। মাইহার ঘরের দুই কিংবদন্তি বাজিয়ে – পন্ডিত তরুন ভট্টাচার্য (সন্তুর) ও পন্ডিত রণু মজুমদার (বাঁশী) একযোগে সুখকর বাজনার উপহার দিলেন। সীমিত সময়সীমার মধ্যে উপস্থাপন করেন কিরবানি রাগ; প্রথমে আওচার ও তারপর গত উপস্থাপনা (ঝাঁপতাল ও ত্রিতালে)। জ্যোতির্ময় রায়চৌধুরীর তবলা সঙ্গত ছিল যথাযথ। অনুষ্ঠানে গল্প দিদির ভূমিকা পালন করেন প্রিয়াঙ্কা চ্যাটার্জী। অতিকথন অনুষ্ঠানকে অহেতুক দীর্ঘ করেছে, যেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন ছিল।
Advertisement
Advertisement



