বাংলা কীর্তনের দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরতে কলকাতার বীড়লা একাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হল তথ্যচিত্র ‘কীর্তন: দ্য হেরিটেজ অব বেঙ্গল’-এর বিশেষ প্রদর্শনী ও লাইভ কীর্তন কনসার্ট। দেবলীনা ঘোষ পরিচালিত এই তথ্যচিত্রটি প্যারিসের Festival Terres du Bengale-এ প্রিমিয়ারের পর আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। সেই সাফল্যের রেশ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ছবিটির প্রথম প্রাইভেট স্ক্রিনিং আয়োজিত হয়।
প্রদর্শনীর পর ছিল দেবোলিনা ঘোষের কীর্তন পরিবেশনা এবং একটি খোলামঞ্চে আলোচনা। সেখানে পরিচালক দর্শকদের সঙ্গে ভাগ করে নেন তাঁর দীর্ঘ গবেষণার অভিজ্ঞতা, নির্মাণপ্রক্রিয়ার বিশেষ দিকগুলো এবং বাংলা কীর্তন ঐতিহ্যের বর্তমান সময়ে গুরুত্ব৷ আট বছরের নিরলস গবেষণার ফলশ্রুতিতে নির্মিত এই তথ্যচিত্র বাংলা কীর্তনের ১৫ শতকের ভক্তি আন্দোলন থেকে শুরু করে আধুনিক প্রজন্মের চর্চা পর্যন্ত এক ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক যাত্রাকে উপস্থাপন করেছে। গবেষকদের বক্তব্য, আর্কাইভাল উপাদান এবং সাংস্কৃতিক-ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের সমন্বয়ে ছবিটি কীর্তনের বিবর্তনকে নতুন দৃষ্টিতে পরখ করে। বর্ষীয়ান অভিনেতা বরুণ চন্দের বর্ণনা ছবিটিকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা।
Advertisement
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বহু শিল্পী, গবেষক, সংস্কৃতিসেবী এবং নানা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। দেবু’স দরবার এবং ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে এই তথ্যচিত্রের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের ডিন অব অ্যাকাডেমিক অ্যাফেয়ার্স ও ট্রাস্টি ড. সুমন্ত রুদ্র জানান, বাংলা কীর্তনের ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে সাংস্কৃতিক চর্চায় নতুন অধ্যায় যোগ করবে।
Advertisement
পরিচালক দেবলীনা ঘোষ বলেন, বাংলা কীর্তনের নিজস্ব ধ্রুপদী সত্তা এবং আলাদা শৈলিকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্টজনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কলকাতার রাশিয়ান ফেডারেশনের দূতাবাসের প্রধান ম্যাক্সিম কোজলভ ও ড. নাতালিয়া গেরাসিমোভা। শুভেচ্ছাবার্তায় গেরাসিমোভা জানান, বাংলার কীর্তনের ঐতিহ্য সারা বিশ্বের দরবারে পৌঁছানো উচিত।
Advertisement



