গত ২৯ নভেম্বর যোগেন চৌধুরী সেন্টার ফর আর্টস-এর উপেন্দ্রকিশোর সভাগৃহে তপন সিংহ ফাউণ্ডেশন ও ছায়ানট (কলকাতা) যৌথভাবে ‘দেবকী কুমার বসুর চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল’ শিরোনামে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৮৯৮ সালের ২৬ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতনামা পরিচালক দেবকী কুমার বসু। বর্ধমান জেলার আর এক কৃতী সন্তান মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামও জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৯ সালে।
সমসাময়িক এই দুই গুণী মানুষের মধ্যে ছিল শ্রদ্ধার সম্পর্ক। বাংলা সাহিত্য অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্ররা দেবকী কুমার বসুকে কতখানি শ্রদ্ধা করতেন তা জানা যায় তাঁর কন্যা গীতা দত্তের স্মৃতিচারণা থেকে। নজরুলের বাল্যবন্ধু, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘হারিয়ে-যাওয়া দিনগুলি২ শীর্ষক লেখায় দেবকী কুমার বসুর কথা উল্লেখ করেছেন। বিশিষ্ট চিত্র সমালোচক সেবাব্রত গুপ্ত যথার্থই লিখেছেন দেবকী কুমার বসু সম্পর্কে— ‘দেবকীবাবু তাঁর আমলেও অন্য গুণী পরিচালকদের চাইতে স্বতন্ত্রই ছিলেন। তাঁর জায়গা ছিল আলাদা। সিনেমা মিডিয়ামে তিনি সাহিত্যের রস পরিবেশন করতেন, কখনও বা মানবিকতা। দেবকী বসুর ছবির সেটাই আসল পরিচয়।’ মানবতার পূজারী নজরুল ৫ নভেম্বর, ১৯৩৩ সালে একটি কবিতার মাধ্যমে তাঁর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন এই মহৎপ্রাণের প্রতি — পরীস্থানের ‘হে’ পরিচালক, তরুণ চিত্র কবি! / তোমার প্রসাদে বাণী মুখর হল মূক বোবা ছবি।
Advertisement
অনুষ্ঠানে ‘দেবকী কুমার বসুর চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথ’ বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করেন অরিজিৎ মৈত্র। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন— অমৃতা দাস, তাপসী হালদার, শর্মিলা পাল, সোমা রায়, অনিন্দিতা ঘোষ, সায়ন্তনী বসু, পাপিয়া ঘোষ, ড. বৈশাখী দাস, অম্বালিকা পাল চৌধুরী, সুভাষ মিত্র এবং রুমা চ্যাটার্জী। শুভাঙ্গী মুখোপাধ্যায় দুটি নজরুল-সঙ্গীত পরিবেশন করেন। দলীয়ভাবে পরিবেশিত হয় ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত নজরুল-সঙ্গীত ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ এবং ‘দাদাঠাকুর’ চলচ্চিত্রে সমবেত কণ্ঠে ব্যবহৃত নজরুল-সঙ্গীত ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’। সোমঋতার একক কণ্ঠে শোনা যায় দেবকী কুমার বসু পরিচালিত বিভিন্ন চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকটি গান।
Advertisement
Advertisement



