গোটা বিশ্বে ৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে এইচএসবিসি

গােটা বিশ্বে ৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে এইচএসবিসি। এর পাশাপাশি ইউরােপ এবং আমেরিকায় তাদের ব্যবসা কমানাের পরিকল্পনাও করেছে বহুজাতিক এই ব্যাঙ্ক’টি।

Written by SNS New Delhi | February 23, 2020 3:36 pm

এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক (Photo: iStock)

গােটা বিশ্বে ৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে এইচএসবিসি। এর পাশাপাশি ইউরােপ এবং আমেরিকায় তাদের ব্যবসা কমানাের পরিকল্পনাও করেছে বহুজাতিক এই ব্যাঙ্ক’টি। ব্রিটেন ছাড়া ইউরােপের অন্য দেশ থেকেও তাদের সেলস, ট্রেডিং এবং ইকুইটি রিসার্চ ব্যবসা গুটিয়ে এশিয়ার দেশগুলিতে স্থানান্তর করা হবে।

গত বছর সংস্থার মুনাফা ৩৩ শতাংশ কমে যাওয়ার কারণেই এই পরিকল্পনা। এইচএসবিসি’র ব্যবসার সিংহভাগই আসে চিন, ভারত সহ এশিয়ার দেশগুলি থেকে। সেখানে আমেরিকা-চিন বাণিজ্য যুদ্ধ, ইউরােপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ফলে যে অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাতে দীর্ঘদিন ধরেই খরচ কমানাের চিৎকরছিল সংস্থাটি।

চিনে সাম্প্রতিক করােনাভাইরাসের থাবা তাদের সেই ভাবনাকেই বাস্তব রূপ দেওয়ার পথ করে দিয়েছে। মুনাফা কমায় ইউরােপ-আমেরিকায় কর্মী ছাটাই করে খরচ কমানাের যে প্রক্রিয়া ব্যাঙ্ক টি শুরু করেছে তার ঢেউ এ দেশের বাজারে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। যদিও, গত কয়েক বছর এশিয়ায় অত্যন্তভালাে ব্যবসা করেছে এইচএসবিসি। কিন্তু, এর সিংহভাগই চিন থেকে এসেছিল। কিন্তু, চিনে করােনাভাইরাস মহামারীর আকার নেওয়ায় এশিয়ার ব্যবসা নিয়ে সতর্ক এইচএসবিসি। ভবিষ্যতে এশিয় দেশগুলিতে কর্মীছাঁটাইয়ের পথে হটতেই পারে সংস্থাটি। সে ক্ষেত্রে ভারতও বাদ যাবে না। যদিও এখন পর্যন্ত সে রকম কোনও ইঙ্গিত এইচএসবিসির তরফ থেকে পাওয়া যায়নি।

গত বছরের অগস্টে সংস্থার সিইও পদ থেকে হঠাৎ বহিস্কার করা হয় জন ফ্লিটকে। তার জায়গায় কার্যনির্বাহী সিইওর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নােয়েল কুইনকে। এইচএসবিসিকে ঢেলে সাজার গুরুভার রয়েছে নােয়েলের কাঁধে। বিশ্বের ৫০ টির বেশি দেশে ব্যবসার বিস্তার ঘটালেও এইচএসবিসি’র সিংহভাগ মুনাফা। এশিয়ার দেশগুলি থেকেই আসে।

নােয়েলের কথায়, ‘বেশ কিছু স্থানে আমাদের ব্যবসা গ্রহণযােগ্য রিটার্ন দিচ্ছে না। সেই কারণে আমরা বিনিয়ােগকারীদের বেশি রিটার্ন দিতে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করছি। পরে সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গকে নােয়েল বলেন, গােটা বিশ্বে আমাদের কর্মীসংখ্যা বর্তমান ২,৩৫,০০০ থেকে কমিয়ে ২,০০,০০০ করা হবে। যদিও কোথায় এই কোপ পড়তে চলেছে তা স্পষ্ট করেনি তিনি।

২০১২ সালে মেক্সিকোয় আর্থিক তছরূপের সঙ্গে এইচএসবিসি’র নাম জড়ানাের পর থেকেই সংস্থার খােলনলচে বদলানাের উপর প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এদিন হংকং-এর শেয়ার বাজারে এইচএসবিসি’র শেয়ার পিছু দর সােমবারের তুলনায় ২.২ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলার বা আনুমানিক ৩১৫০০ কোটি টাকার খরচ কমানাের লক্ষ্য স্থির করেছে ব্যাঙ্ক’টি। যদিও সংস্থা পুনর্গঠন খাতে ৬০০ কোটি ডলার খরচ করবে এইচএসবিসি। ইউরােপ এবং আমেরিকার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে খরচ সব থেকে বেশি কমানাের সঙ্গে মুনাফা প্রদানকারী এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে খরচ বাড়ানাে হবে।

সংস্থার জটিল কাঠামােয় বদল করাও অন্যতম লক্ষ্য এইচএসবিসি’র। এর জন্য সার্বিক ভাবে এইচএসবিসি গােষ্ঠী এবং সদর দপ্তরের খরচ কমানাের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমেরিকায় তাদের শাখার সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমানাের পরিকল্পনা নিয়েছে এইচএসবিসি। ইউরােপ এবং আমেরিকায় তাদের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পত্তির যথাক্রমে ৩৫ শতাংশ এবং ৪৫ শতাংশ কমাবে এইচএসবিসি।