‘হামসাজ দ্য মিউজিক্যাল’। ছবির নামেই স্পষ্ট সুরের একটা বিরাট ভূমিকা আছে এ ছবিতে। ৯০-এর দশকের মিউজিক্যাল রোমান্টিক ছবির তালিকায় সুরজ বরজাতিয়াদের ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ এবং ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’- দুটোই ছিল সুপারহিট। ‘আশিকী’ এখনও মানুষের হৃদয়ে পাকাপাকি জায়গা নিয়ে আছে। কিন্তু এমন অনেক উদাহরণ থাকা সত্ত্বেও, অন্বষা দত্ত গুপ্তের এই স্ক্রিন ডেবিউটা কীসে আলাদা?
বায়োসিনে প্রোডাকশন হাউস প্রযোজিত এই অনন্য সঙ্গীতধর্মী ছবিতে মাল্টি টাস্কিং করেছেন অন্বেষা। একাধারে অভিনয় করেছেন, তিনিই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরার, গীতিকার এবং এগারোটা গানের সুরও তাঁর। লিড সিঙ্গার হিসেবে গানগুলি গেয়েছেনও তাঁর মৌলিক স্টাইলে, সুরেলা গলায়। অন্বেষা ছাড়াও ছবিতে গান গেয়েছেন শান এবং অভয় যোধপুরকর।
সৌম্যজিৎ গাঙ্গুলি পরিচালিত ছবিটি শুরু হয়, বেশ ‘ক্রিস্প’ সংলাপ দিয়ে। যেখানে ছবির চরিত্রগুলির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন অন্বেষাই।
এরপর তিন বন্ধু, খনক (অন্বেষা) জোয়া (ধ্রুপদী) এবং নিশার (প্রকৃতি) হাত ধরে ছুটি কাটানোর ডেস্টিনেশন ডুয়ার্স-এ পৌঁছোন দর্শক। প্রকৃতি, প্রেম আর সুরের মেলবন্ধনে এগোতে থাকে কাহিনী যার চতুর্থ কোনটিতে থাকেন ছবির নায়ক, লয়। এই লয়ের চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন পরিচিত মডেল মহম্মদ ইকবাল।
লয় এই তিন বান্ধবীর পূর্ব পরিচিত, কারণ তাঁরা একসময় একই গুরুকূলে সঙ্গীতের অধ্যয়ন করেছেন। অথচ আশ্চর্যের বিষয়টি হল দেখা হওয়ার পর লয়, খনককে চিনতে অস্বীকার করে। পরিস্থিতি জটিলতর হয় যখন এসে উপস্থিত হয় লয়ের সহকর্মী অক্ষয় এবং তাঁর বান্ধবী রূপালি। কেন এই জট জানতে ছবিটি দেখতে হবে। প্রেমের মরশুম, বসন্ত কাল এবং অমলিন প্রকৃতি- এই তিনের সমন্বয় লুকিয়ে আছে ছবিটির রসায়নে।
অন্বেষা ক্যামেরার সামনে বেশ স্বচ্ছন্দ। তুলনায় নায়ক যেন কিছুটা আড়ষ্ঠ। আশা করা যায় আগামীতে আরও অনেকটা সপ্রতিভতা দেখব ইকবালের মধ্যে। নায়ক ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রেরা সকলেই বাস্তব জীবনে গায়ক গায়িকা। চমক হিসেবে রয়েছে দেবলীনা কুমারের একটি নাচের দৃশ্য। সবমিলিয়ে উপভোগ্য রোম্যান্স, প্রত্যাখ্যান এবং আত্ম-আবিষ্কারের গল্প ‘হামসাজ’।