সুরঞ্জন দে-র পরিচালনায় ক্যামেরাবন্দি হতে চলেছে ‘রিলেশনশিপ’

এ যাবৎ প্যাশন থেকে শর্ট ফিলম তৈরি করেছেন সুরঞ্জন দে। কিন্তু এবার তাঁর হাতে এসেছে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি তৈরির সুযোগ। তাঁর তৃতীয় শর্ট ফিলম ‘আনলাকি শার্ট’ এ পর্যন্ত দেশ-বিদেশের মোট ছ’টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়েছে।

শুধু তাই নয়, তাঁর ‘আনলাকি শার্ট’ ছবির আন্তর্জাতিক সাফল্যের জন্য, অন্ধ্রপ্রদেশের ‘ফিলম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রমোশন কাউন্সিল’ ( এফটিপিসি) তাঁকে সম্প্রতি অ্যাপ্রিসিয়েশন সার্টিফিকেট দিয়েছে। আর এই সাফল্যের সূত্র ধরে, দক্ষিণ ভারতের প্রযোজনা সংস্থা ‘রিসার্চ মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্টস’ নিবেদন করছে ‘রিলেশনশিপ’ ছবিটি।

সুরঞ্জন-এর এই ছবির দুই প্রযোজক চৈতন্য জংগা এবং পিভিএস ভার্মা পকালপতি জানিয়েছেন, ‘রিলেশনশিপ’-এর কাহিনি এবং চিত্রনাট্য তাঁদের মন ছুঁয়ে গেছে, তাই তাঁরা ছবিটি প্রযোজনা করতে উৎসাহী হয়েছেন।


তবে,এই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার আগে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানোর কথা ভেবেছেন পরিচালক এবং প্রযোজকরা। 

সেইসঙ্গে প্রসঙ্গত পরিচালক সুরঞ্জন দে জানিয়েছেন, তিনি সবসময়ই ভিন্নধর্মী বিষয় নিয়ে ছবি বানাতে আগ্রহী।তাই খুব স্বাভাবিক ভাবে তাঁর এই ছবিটিও সমাজকে নতুন কিছু বার্তা দেবে এবং দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে, এমনই আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। 

ছবির কাহিনি প্রসঙ্গে পরিচালক সুরঞ্জন দে জানিয়েছেন, মানুষ বেশিটাই বাঁচে মনে-মনে। আর এই মনে-মনে বাঁচার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকে ‘সম্পর্ক’। যার সম্পর্কের বন্ধন যত সুদৃঢ়, তার মনুষ্য জীবন ততই সফল।

কারণ, কোনও মানুষ একা ভালো ভাবে বাঁচতে পারে না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, আমারা বোধহয় এক একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো রূপ নিচ্ছি। নিকট আত্মীয়, এমনকি একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও নানান কারণে দূরত্ব বাড়ছে ক্রমশ।

আর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই বিচ্ছিন্নতা এবং ব্যবধান কীভাবে কয়েকটি চরিত্রকে আলোড়িত করবে, প্রভাবিত করবে, তা-ই ‘রিলেশনশিপ’ ছবির অন্যতম মূল বিষয়। পরিচালক সুরঞ্জন দে নিজেই লিখেছেন এই ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ।

এই ছবির কাহিনিতে এক কঠিন এবং জটিল সত্যের মুখোমুখি হবে কেন্দ্রীয় চরিত্ররা। আর পরিশেষে যা ঘটবে, তা সকলের মন ছুঁয়ে যাবে এবং সংবেদনশীল মানুষকে অন্য ভাবে ভাবতে শেখাবে, এমনই আশাপ্রকাশ করেছেন পরিচালক। সেইসঙ্গে, ‘রিলেশনশিপ’ ছবিটির মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অন্যরকম তথ্যও উন্মোচিত হবে বলেও জানানো হয়েছে। 

ছোটো ও বড়ো ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আছে এমন শিল্পীরা ‘রিলেশনশিপ’ ছবিটিতে অভিনয় করবেন বলে জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রূপ দিতে চলেছেন অশ্নী দাস, ঋদ্ধিবান বন্দ্যোপাধ্যায়, বনশ্রী দে, ড. ভানু ভূষণ খাটুয়া এবং পরিচালক সুরঞ্জন দে স্বয়ং। নতুন মুখ সৃজা মাইতি, বিশ্বজিৎ পাল, মণিময় সাহু, রোজি পিয়ালি দাস প্রমুখ অভিনয় করবেন এই ছবিতে।

এই প্রসঙ্গে পরিচালক সুরঞ্জন দে জানিয়েছেন, এখনও শিল্পী তালিকা সম্পূর্ণ হয়নি। দক্ষিণ ভারত এবং মুম্বইয়ের কিছু শিল্পীও অভিনয় করতে পারেন এই ছবিতে।

ছবিটির চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন আকাশদেব। বিশিষ্ট সন্তুর শিল্পী পণ্ডিত তরুণ ভট্টাচার্য এই ছবির সংগীত পরিচালনা করবেন বলে জানানো হয়েছে। গানে কন্ঠ দেবেন মধুপর্ণা গাঙ্গুলী।

আগামী 22 ডিসেম্বর ইমপা হাউসে অনুষ্ঠিত হবে ছবিটির মহরৎ এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হবে ছবির শুটিং শুরু করার কথা।

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কয়েকদিনের শুটিং হবে কলকাতার আশপাশ অঞ্চলে। এ ছাড়া, প্রযোজকদের ইচ্ছানুসারে দক্ষিণ ভারত, মুম্বই এবং গোয়া-য় শুটিং করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানিয়েছেন পরিচালক সুরঞ্জন দে।