ফেলুদা করা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়

এবার শীতে তোমার হাত ধরে ফেলুদা আসছে। ফেলু মিত্তির তো বাঙালির আবেগ। এবার তুমি পরিচালক। তোমার কাছে কতটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়টা?

উত্তর: এটা তো আমার কাছে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। কারণ এর আগে আমি ফেলুদা করিনি। ফেলুদা কেন, কোনও ডিটেকটিভ থ্রিলার করিনি। অফার যখন এসেছিল, তখন বলেছিলাম, ঠিক আছে। আই ক্যান ট্রাই। আমি বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এই বিষয়ে কাজ করা হয়ে ওঠেনি। এই ফেলুদা নিয়ে কাজ করা বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং। কারণ, সত্যজিৎ রায় নিজে এটা নিয়ে কাজ করেছেন। সন্দীপ রায় করেছেন। সেগুলো দেখে বড় হয়েছি। রিসেন্টলি সৃজিত কাজ করেছে। এবার আমি করছি। ফেলু মিত্তির বাঙালির আবেগ তো বটেই। এবার দেখা যাক, আমার কাজ মানুষের কেমন লাগে।


অভিনেতাদের কাছে ফেলুদা করার লোভ থাকে। আর পরিচালকদেরও একটা ফেলুদা করার লোভ থাকে, যে আমার কাজের সারণীতে একটা ফেলুদা থাকবে। তোমারও কী সেই ব্যাপারটা ছিল?

উত্তর: হ্যাঁ। ফেলুদা নিয়ে আলাদা উত্তেজনা আছে। ছিল। থাকবেও। ফেলুদা নিয়ে নস্টালজিয়াও আছে। ছোটবেলায় ফেলুদা জন্মদিনের প্রাপ্য বই ছিল। একদম প্রথমে পেয়েছিলাম বাদশাহী আংটি। তারপর গ্যাংটকে গন্ডগোল। আসলে ফেলুদার গোয়েন্দা গিরি পরে পড়েছি। এগুলো আগে পড়েছি। আমার প্রিয় গল্প ‘সোনার কেল্লা’। ছবিটা কিন্তু আমি পরে দেখেছি। আগে গল্প পড়েছিলাম। ছোটবেলার ফ্যাসিনেশন এখন একটা নস্টালজিয়া হয়েছে। আমি মনে করি শিশু কিশোর সাহিত্যের মধ্যে একটা অনবদ্য কাজ ফেলুদা।

ছবিটা তুমি কীভাবে তোমার মত করে করলে?

উত্তর: হ্যাঁ এই বিষয়ে বলি, আমি একদমই এই ছবিটাকে আধুনিক ইন্টারপ্রিটেশন করলে যেমন দাঁড়াবে, সেভাবে করতে চাইনি। আমি একটু পুরনো ধাঁচেই করার চেষ্টা করেছি। যেভাবে সত্যজিৎ রায়, সন্দীপ রায় করেছেন। মেকিংটা আমি সেভাবেই করতে চেয়েছি। কেন করতে চাইনি, তার দুটো কারণ হল, আমি মনে করি বাঙালির ফেলুদাকে নিয়ে যে নস্টালজিয়া আছে সেটা ভেঙে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয়ত, এক্সপেরিমেন্ট করে এই কাজ করা আমার উচিত নয় বলে মনে হয়েছে। এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করলে কনটেন্ট ওয়াইজ বদল করতে হবে। সেটা উচিত নয়, সম্ভব নয়, দরকারও নেই বলে মনে করি। সব মিলিয়ে ভালো এক্সপেরিয়েন্স।

রয়েল বেঙ্গল রহস্যটাই বাছলে কেন?

উত্তর: না তেমন কানেকশন নেই। তবে জঙ্গলের গল্প বলতে আমার ভালোই লাগে। এর আগেও চেষ্টা করেছি। জঙ্গল মানেই একটা অ্যাডভেঞ্চার আছে। তো রয়েল বেঙ্গলে জঙ্গল আর ফেলুদা দুই আছে। আর একটা কথা, এই ফেলুদার যে জটায়ু আর তপসের ট্রায়ো সেটাকে আমি ভীষণভাবে ছোটবেলা থেকে রিলেট করেছি। আমারও দাদারা আমাকে ভীষণ গাইড করেছে। আমি মনে করি প্রতিটা বাঙালি বাড়িতে এমন একজন দাদা বা মানুষ আছেন, যদিও এখন নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি বলে কমেছে হয়তো তবুও, এমন একজন মানুষ আছেন যিনি আমাদের প্রথম গল্পের বইটা পড়তে দিয়েছেন, প্রথম নাটকের টিকিট কেটে দিয়েছেন, বা সিনেমা দেখার কথা বলেছেন। এত বেশি রিলেটেবল ক্যারেকটার। তাই এই কাজ করতে আরও বেশি ভালো লেগেছে। আশা করব আমার করা ফেলুদা মানুষের ভালো লাগবে।