হারিয়ে যাওয়া হাসির সন্ধানে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব

কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

আজকের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে ছুটে চলা জীবনে মানুষের হাসি কোথায় যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। আর সেই ব্যস্ত জীবনে একটু ফাঁক ফোকর খুঁজে নিয়ে যারা মানুষকে কিছুটা সময় হলেও আনন্দ দেন বা তাঁদের কুশলী অভিনয়ের গুনে নির্ভেজাল হাসি ফিরিয়ে পাওয়া যায় কাছ থেকে সেই কৌতুকাভিনেতাদের চেনার ও জানার সাহায্য করল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।

তবে এক বাক্যে এরা সকলেই নিজেদের চরিত্রাভিনেতা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন। আড্ডা জোনে এদিন হাজির ছিলেন শুভাশিষ মুখার্জি, বিশ্বনাথ, মানসী সিনহা, খরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়, অম্বরিশ ভট্টাচার্য্য। আড্ডার সঞ্চালনায় ছিলেন পরিচালক সুদেষ্ণা রায়।

রসবােধে সুদেষ্ণা রায়ও কম কিছু নন। এদিন স্ট্যান্ডআপ কমেডি নিয়ে রীতিমতাে সওয়াল করলেন তিনি। দর্শকদের চাহিদা মেনেই এখন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে উঠে আসেছে স্ট্যান্ড আপ কমেডি। কমেডির আঙিনায় একটি আকর্ষনীয় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। যা আজ বিদেশেও সমাদৃত। কিছু কাজ অবশ্য এই বাংলাতেও হয়েছে। তবে দর্শকদের চাহিদার তুলায় তা নেহাতই নগন্য। পরিচালক সুদেষ্ণা রায় আরও মনে করেন, স্ট্যান্ডআপ কমেডিতে চিত্রনাট্যকার যা লিখে দেন তার উপর কিছু না কিছু সংযােগ-বিয়ােগ করেই থাকেন অভিনেতারা। কারণ, একটা লেখা কখনােই অভিনেতাকে তৈরি করতে পারেনা যদি না সেই রসদ তার মধ্যেই থাকে।


সুদেষ্ণার কথায় সহমত পােষণ করেন খরাজও। নিজের একটি ছােট্ট অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিলেন তিনি। রাজ চক্রবর্তির দুই পৃথিবী সিনেমায় খানিকটা পরিচালকের অবাধ্য হয়েই নিজের চরিত্রে প্যান্ট-শার্টের পরিবর্তে ধুতি পরে অভিনয় করেন খরাজ। প্রথমে নাকোচ করলেও পরবর্তীতে এই কাজের জন্যই খরাজের প্রশংসাও করেন পরিচালক তথা কিফের চেয়ারম্যান রাজ চক্ৰবৰ্তি।

আড্ডা জোনেই আজকের কৌতুকাভিনেতারা স্মরণ করেন বাংলা সিনেমার সুবর্ণ যুগের সেই সব অভিনেতাদের যাদের অভিনয় আজও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে বাঙালীর মনে। উৎপল দত্ত থেকে তুলশি চক্রবর্তি, চিন্ময় লাহিড়ি থেকে রবি ঘােষ কে নেই সেই তালিকায়। যাদের জন্যই লেখা হতাে গল্প হলেও সত্যি , আশি তাে আসিও না , ভানু গােয়েন্দা জহর অ্যাসিস্টেস্ট ‘র মতাে সিনেমা। এমনকী মৌচাক  থেকে শুরু করে ছদ্মবেশি-র মতাে সিনামায় সেই আমলের জনপ্রিয় সব কৌতুকাভিনেতাদের জহর রীতিমতাে টেক্কা দিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার।

কিন্তু যুগ বদলেছে না নাকি পরিচালক-প্রযােজকদের ইচ্ছা? প্রশ্ন তুলেছে বর্তমানের কৌতুকাভিনাতরা। এখন আর আলাদা করে কোনও হাসির সিনেমা তৈরি হয়না। ওই গড়পড়তা সিনেমার মধ্যেই দর্শকদের সমান্য অবকাশ দিতেই কিছুটা কমেডি’র অবতরণ ঘটান পরিচালকরা। এখন বড়ই গতানুগতিকতায় চলছে আজকের সিনেমা বলেও মন্তব্য করেন অভিনেতা শুভাশিষ মুখার্জি। একই সঙ্গে একটি কমেডি সিনেমার জন্য চিত্রনাট্যও ভালাে হওয়া চাই বলে মেনে করেন আজকের জনপ্রিয় পরিচালক তথা অভিনেত্রী সুদেষ্ণা রায়। কমেডি লেখার মতাে চিত্রনাট্যকারও আজকাল টলি ইন্ডাস্ট্রিতে কম বলে মনে করেন বাংলার জনপ্রিয় কৌতুকাভিনেতারা।