প্রশ্ন: প্রতীম তো খাবারকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। ‘কর্মা কোর্মা’র অফার এল, চুজ করলে, সে বিষয়টা যদি বলো একটু।
ঋতাভরী: প্রতীমদার কাজে খাবারকেই হিরোইন মনে হয় (হাসি)। আসলে, প্রতীমদার কাজ একটু অন্যরকম হয়। ‘ফাটাফাটি’ দেখার পর আমাকে জানিয়েছিলেন, আমার কাজ ভালো লেগেছে। আমি খালি জানতে চেয়েছিলাম, আমরা কবে কাজ করব? তার প্রায় এক কী দেড় বছর পর আমাদের একসঙ্গে আড্ডা হয়। কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। তার দুই মাস বাদে ‘কর্মা কোর্মা’র অফার আসে। আমাকে বলেন, মনে কর, তুই গায়ত্রী দেবী। কিন্তু মাথাটা সাইকো কিলার। ব্যাস। আমি তখনই কাজটা করতে রাজি হই। গল্প একদম অন্যরকম। দারুণভাবে কাজ করেছি। অনেক কিছু শিখেছি। তবে ‘মাছের ঝোল’ বা ‘রান্নাবাটি’র মত এটাতে কুকিং নিয়ে তেমন কিছু নেই। তবে আমার আর সোহিনীদির দেখা হয় একটা কুকিং শোয়ে। তারপর যা কুক হয়, সেটা দর্শক দেখবেন।
প্রশ্ন: আদ্যোপান্ত একটা থ্রিলার সিরিজ কি এটা?
ঋতাভরী: থ্রিলার পুরোটা। ড্রামা আছে। দুই মহিলা, তাদের ব্যক্তিগত জীবন খুবই কষ্টকর। তাদের বন্ধুত্ব হয়। তারা কিছু একটা করে। আমার চরিত্রটা এই সিরিজে খুব বোল্ড। ঋত্বিকদা তদন্ত করে। এই পুরো বিষয়টা কী, তা বলে দিলে তো আর কিছুই বাকি থাকবে না (হাসি)।
প্রশ্ন: তোমার চরিত্র বোল্ড। তবে জীবনে তুমি বেশ বোল্ড সিদ্ধান্ত নিতে পারো।
ঋতাভরী: (হাসি) আমি আশা করি সবাই যেন বোল্ড ডিসিশন নিতে পারে। একমাত্র মরে গেলেই সোজা লাইন দেখা যাবে মনিটরে। তার আগে অবধি কার্ভ লাইন দেখা মানে উপর নীচ যেন চলে।
প্রশ্ন: তোমার ভাবনার প্রসারটা একটু আগাম?
ঋতাভরী: এভাবে ভাবিনি। আমি একটু আলাদা করে ভাবি। যা ভাবি ফরচুনেটলি সেটা করি। আসলে আগে ভাবলাম, কী পরে ভাবলাম জানি না। আমরা রিয়েল লাইফে একটা জার্নি করছি। কী করে কী করলে ভালো হবে, এসব ভেবে এগিয়ে যাচ্ছি। আর আমি কাউকে আমার কমপিটিটর ভাবি না। কারণ আমি আমার কাজ করি। নিজের মতো করে। বাংলায় অন্য অভিনেত্রীদের জীবন যদি ইন্সপায়ার করে বিশ্বাস করো, কখনও কোনও হিংসা হয় না। আমি আমার জীবনটা, আমার জীবনের জার্নিটা খুব সুন্দর রঙিনভাবে বেছেছি। আজ আমি যা, সেটা আমার জার্নিটা।
প্রশ্ন: পড়াশোনাটাও চালিয়ে গেলে অভিনয়ের পাশাপাশি। এর পিছনে পরিবারের অবদান রয়েছে?
ঋতাভরী: একটা অ্যাকাডেমিক পরিবারে বিলং করলে পড়াশোনার একটা ব্যাপার থাকে। তবে আমার পরিবারের তরফে কখনোই চাপ ছিল না। আমি নিজে পড়তে ভালোবাসি। আমি বাইরে গিয়ে অভিনয় নিয়ে পড়েছি। কারণ, আমি যে বিষয়ে কাজ করছি তার লিটারেচারটা পড়তে চেয়েছি। আমার মনে হয় আমি সবসময় স্টুডেন্ট। আমি ফ্লোরে থাকলেও ডিরেক্টররা কী চান সেটা বোঝার চেষ্টা করি। শিখি।
প্রশ্ন: তুমি কি পরিচালকের বাধ্য অভিনেত্রী?
ঋতাভরী: পরিচালক হলেন হেড অফ দ্য শিপ। তিনি সব দেখেন। আমি পরিচালকদের ফলো করার চেষ্টা করি। কখনও নিজের মতো কাজ করি। ভুল হলে আমাকে লজিক বলে দিলে আমি সেভাবেই করি। আমি ডিরেক্টরদের কথা শুনে কাজ করি।
প্রশ্ন: ‘পাপা বুকা’ নিউ গিনি থেকে অস্কারের নমিনেশনে যাচ্ছে। গোয়ার পর এবার একেবারে অস্কারের জুরিদের সামনে। অনুভূতি কেমন?
ঋতাভরী: ভীষণ উত্তেজিত। আমার নিজের ইউনিভার্সিটিতে আমার টিচারদের সামনে দেখাবো, জুরি মেম্বাররা তো থাকবেনই। এটা ভীষণ আনন্দের ব্যাপার।
প্রশ্ন : বিয়ে কবে করছো?
ঋতাভরী: (খুব হাসি) বাড়িতে মাও জানতে চাইছে। আসলে আমাদের দু’জনের ব্যস্ততার জন্যই আমরা ঠিক সময় করে উঠতে পারছি না। ইচ্ছে আছে আগামী বছর। দেখা যাক কী হয়!
প্রশ্ন: একদিকে বিদেশ যাত্রা আবার একদিকে সিরিজ রিলিজ।
ঋতাভরী: আমি সব দিকে থাকব। বিদেশ যাব। ‘কর্মা কোর্মা’ তোমাদের দেখতে বলব। আমার বাদবাকি কাজ করব। সব সমান তালে সামলাবো। দর্শকদের উদ্দেশে একটা কথাই বলব, কোনোভাবেই মিস করবেন না এই সিরিজটা। এই সিরিজ আপনাদের অনেক কিছু শেখাবে।