প্রশ্ন: মডেলিং থেকে অভিনয়, হাঁটি হাঁটি পা পা করে বহু পথ এগোনো হল। এই জার্নিটা কেমন?
রুক্মিনী: অনবদ্য। বেশ অনেকটা পথ এগিয়েছি। এখন পিছন ফিরে তাকালে অবাক লাগে। মনে হয়, বাপরে কতটা পথ হাঁটা হয়ে গেল। দর্শকদের ভালোবাসা, মা-বাবার আশীর্বাদ, এসব পাথেয় করেই এগিয়ে চলা। আসলে ছোটবেলায় অনেক কিছু করার স্বপ্ন থাকে। টিচার হব, শাসন করব। প্রফেসর হব, ল’ইয়ার হব। এসব ভাবনা চিন্তা থাকে। অভিনয়ের মাধ্যমে এসব চরিত্র করতে পারছি। এই ছবিতে যেমন শাসন করেছি বাবাকে। মানে চিরঞ্জিতদাকে।
প্রশ্ন: বাড়িতে তোমায় সবাই শাসন করে, নাকি তুমিই সবাইকে শাসন করো।
রুক্মিনী: একটা সময় পর্যন্ত যা হয়, আমাকে সবাই শাসন করতো। এখন একটু সুইচ করেছে। আমাকে একটু ভয় পায় (হাসি)। বাড়িতে মাঝে মাঝে হিটলার বলে ডাকে। তবে হেড মা। এখনও মা-দাদার কাছে বকা খাই। তাঁরা শাসন করেন।
প্রশ্ন: দাদাকে ভয় পাওয়ার কারণ কী? দাদা রাগী?
রুক্মিনী: দাদা প্রোটেকটিভ। টিপিক্যাল দাদা। এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না, এমন। আমি গার্লস স্কুলে পড়তাম। দাদাদের বয়েজ। দাদার বন্ধুরা আসত। একজন আমাকে পছন্দ করত। আমি বুঝতাম। দাদা রাখির দিন লাইন দিয়ে বন্ধুদের এনে আমাকে দিয়ে রাখি বাঁধিয়েছিল (হাসি)।
প্রশ্ন: গোয়া ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বিনোদিনী নমিনেটেড হয়েছে।
রুক্মিনী: হ্যাঁ, আর এই ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ছবিটারও গোয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হচ্ছে। এটা একটা দারুণ ব্যাপার। যে ছবি দিয়ে এই বছরের শুরু এবং যে ছবি দিয়ে এই বছরের শেষ— দুটো ছবিই গোয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আঙিনায়।
প্রশ্ন: এই বছরটা বাংলা সিনেমার জন্য দারুণ। আচ্ছা ন’বছর পর যে ছবিটা রিলিজ করল, সেটা দেখেছো?
রুক্মিনী: আমি ‘ধূমকেতু’ দু’বার দেখেছি। আসলে, সত্যি কথা অনেকেই জানে না, ‘ধূমকেতু’ নৈনিতালে যখন শুট হচ্ছিল, তখন আমি আমার দাদা-বৌদি, দাদার শ্বশুর-শাশুড়ি, পুচকেটাকে নিয়ে আমরা সবাই মিলে ফ্যামিলি ট্রিপে নৈনিতাল গিয়েছিলাম। সকলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ২০১৬-তে আমি ছবিটা একবার দেখেছিলাম। তারপর তো প্রিমিয়ারে দেখেছি।
প্রশ্ন: আচ্ছা দেবের সঙ্গে কবে আবার একসঙ্গে তোমাকে দেখা যাবে?
রুক্মিনী: ভালো স্ক্রিপ্ট পেলে, ডিরেক্টররা আমাদের একসঙ্গে ভাবলে, ভাগ্যে থাকলে আবার হবে। একটা কথা বলি, দেব কিন্তু আমাকে অফার করে না। শুধু ‘চ্যাম্প’ অফার করেছিল (হাসি)। অনেক স্ক্রিপ্ট পড়ছি। দেখা যাক। কবে আবার একসঙ্গে কাজ হয়।
প্রশ্ন: একের পর এক কাজ করে অনেক পরিণত হয়েছ। বিনোদিনী করার পর তুমি নিজের মধ্যে কী চেঞ্জ দেখেছো? অভিনয়ের ক্ষেত্রের দিক থেকেও পরিসর অনেক বাড়িয়েছো।
রুক্মিনী: এভাবে ভাবিনি। তবে গ্রোথই তো লাইফ, বলো! দেখো আমরা সবাইকে অবজার্ভ করি। কিন্তু নিজের ক্ষেত্রে সেটা কম হয়। অন্তত আমার নিজেকে অবজার্ভ করা কম হয়। ওই একটা কথা আছে না, ‘সামথিং চেঞ্জ উইদিন’। তেমন কিছু হবে হয়তো! জানি না অত। (হাসি)
প্রশ্ন: এই ছবিটা করে কেমন লাগল বলো?
রুক্মিনী: স্ক্রিপ্টটা পড়েই ভালো লেগেছিল। কানেক্ট করেছিলাম। আসলে আমি আমার বাবার সঙ্গে সময় কাটানোর ওই বয়সটায় যেতেই পারিনি। আমার কাছে মা-ই সব। ঝগড়া-ঝাঁটি-অশান্তি সব। কিন্তু ভালোবাসাটাও অপার। এই ছবিটার ক্ষেত্রে উল্টো। এখানে বাবা মেয়ের গল্প। ভালোবাসার গল্প। কিন্তু এখানে যেভাবে শাসন করেছি আমি চিরঞ্জিতদাকে, আমার মায়ের সঙ্গে সেসব করার সাহস আমার নেই। ওভার-অল দারুণ লেগেছে এই ছবিটা করে।