সলমান খান অভিনীত ছবি ‘ব্যাটল অব গালওয়ান’-এর ট্রেলার প্রকাশের পর চিনের সংবাদ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া। ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা সেনার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে তৈরি এই ছবি নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছে চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’। তাদের দাবি, যখন ভারত–চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সাম্প্রতিক কালে কিছুটা উন্নতির ইঙ্গিত মিলছে, সেই সময়ে এই ছবির ট্রেলার প্রকাশ ‘অনুপযুক্ত’ বলে দাবি করা হয়েছে।
চিনের কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সরকারের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত ওই সংবাদমাধ্যম এক নিবন্ধে দাবি করেছে, ‘চলচ্চিত্রের কোনও মাত্রার অতিরঞ্জন ইতিহাস বদলাতে পারে না, কিংবা চিনের সার্বভৌম ভূখণ্ড রক্ষায় পিপলস লিবারেশন আর্মির সংকল্পকে নড়বড়ে করতে পারে না’। তাদের বক্তব্যে বলা হয়েছে, গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়ে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গিকে একপেশেভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
‘গ্লোবাল টাইমস’ আরও দাবি করেছে, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনা চিনের ভূখণ্ডে প্রবেশ করার পর। তাদের কথায়, ‘ছবিতে যতই নাটকীয় রূপ দেওয়া হোক না কেন, গালওয়ান ঘটনার মূল বাস্তবতা বদলানো সম্ভব নয়’। পাশাপাশি ছবির বিষয়বস্তু ও মুক্তির সময় নির্বাচনকে ‘অনুপযুক্ত’ বলে উল্লেখ করে তারা অভিযোগ করেছে, এই ছবি ভারত–চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরোধী মনোভাব উসকে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর সলমান খান অভিনীত এই ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে আসে। আগামী ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে বিশ্বজুড়ে প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। ছবিতে সলমান খানকে কর্নেল বিক্কুমল্লা সন্তোষ বাবুর চরিত্রে দেখা যাবে। তিনি ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় শহিদ হন। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান অঞ্চলে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।
সূত্রের দাবি অনুযায়ী, প্রায় ২০০ জন ভারতীয় সেনা প্রায় ১২০০-এর বেশি চিনা সেনার মোকাবিলা করেন। ওই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা শহিদ হন। চিন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের চার জন সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করলেও, আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে মৃত চিনা সেনার সংখ্যা ৪২ পর্যন্ত হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। এই ছবির ট্রেলার ঘিরে চিনের এমন কড়া প্রতিক্রিয়া ফের একবার গালওয়ান সংঘর্ষ ও ভারত–চিন সম্পর্কের সংবেদনশীল দিকগুলোকে সামনে এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।