অসমের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গার্গের মৃত্যুতে অভিযুক্তদের বকসা জেলে নিয়ে যাওয়ার পথে বুধবার পুলিশের কনভয়ে হামলা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, শূন্যে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি বাগে আনে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে ওঠে আপার অসম। হামলাকারীরা দাবি করেছিল, ‘অভিযুক্তদের আমাদের হাতে ছেড়ে দিন।’ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় হামলাকারীদের। ঘটনার জেরে ৩ দিনে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরও অনেককে শনাক্ত করা হয়েছে বলে খবর। খোঁজ পেলে তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
শনিবার বক্সার সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) উজ্জ্বলপ্রতিম বড়ুয়া জানিয়েছেন, ‘জুবিনের অনুরাগীর ছদ্মবেশে আসলে যাঁরা হিংসায় উস্কানি দিয়েছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় জুবিনের প্রকৃত ভক্তদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিছু অভিযুক্ত পলাতক। তবে আমরা শীঘ্রই তাঁদের গ্রেপ্তার করব। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্তের জন্য একটি দলও গড়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, শুক্রবার প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রী গরিমা গার্গের সঙ্গে দেখা করতে অসমে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। শুক্রবার অসমে গিয়ে সঙ্গীতশিল্পীর স্ত্রী গরিমার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জুবিন গার্গের মৃত্যুর পর শোকপ্রকাশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী।
জুবিন গার্গের মৃত্যু পর জটিলতা দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রখ্যাত গায়কের জ্ঞাতি ভাই তথা অসমের পুলিশ অফিসার সন্দীপন গার্গ। তিনিও শিল্পীর সঙ্গে সিঙ্গাপুর সফরে গিয়েছিলেন। সন্দীপন অসম পুলিশ সার্ভিসের সুপারিন্টেন্ডেন্ট (ইন-চার্জ) পদে কর্মরত ছিলেন। জুবিনের মৃত্যুর পর গঠিত অসম সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল সন্দীপনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে জুবিনের মৃত্যুরহস্যে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তাঁর ব্যান্ড সদস্য শেখরজ্যোতি গোস্বামী এবং অমৃতপ্রভা মোহন্ত। এছাড়াও গ্রেপ্তার হন সিঙ্গাপুরে নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মোহন্ত ও জুবিন গার্গের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা। জুবিন গার্গের মৃত্যু তদন্তে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নির্দেশে জুবিন গার্গের মৃত্যু তদন্তের জন্য সম্প্রতি ‘সিট’ও গঠন করে অসম সরকার। অভিযুক্তদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।