বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পার্টি কর্মীদের একজোট হবার ডাক ইয়েচুরির

সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। (Photo: IANS)

লােকসভা নির্বাচনে খাতা খুলতে পারেনি সিপিএম । জনসমর্থন ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। বিজেপির দাপটে বিগত নির্বাচনে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে দলীয় সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে দলকে শক্তিশালী করতে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করার ডাক দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দলের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সকলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কেন্দ্রের বিজেপি শাসনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডাের স্টেডিয়ামে দলের একশােতম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। শুধু সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকই নন, দলের রাজ্য সম্পাদক সুর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বিজেপির বিভেদমূলক রাজনীতি নিয়ে সরব হন।


সীতারাম বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, হাত গুটিয়ে থাকলে চলবে না, সকলকে রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ, প্রতিরােধ আন্দোলনে নামতে হবে। বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের জোট গড়ে তােলার ডাক দিয়েছেন সিপিএম নেতারা। সীতারামের সাফ কথা, এনআরসির নামে গােটা দেশে বিজেপি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে নিজেদের ভােটব্যাঙ্ককে মজবুত করার প্রচেষ্টা বিজেপি শুরু করেছে বলে অভিযােগ করেছেন তিনি।

তিনি মনে করেন, বিজেপি যেভাবে দেশে হিন্দুত্ববাদকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে, তাতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সংবিধানকে আঘাত করা হচ্ছে। অতীতে কেন্দ্রে সরকার গঠনে বামেদের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, সেটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি। তিনি মনে করেন, দেশের বর্তমান এই পরিস্থিতিতে বামপন্থীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, মুর্তিপুজোকে কেন্দ্র করে প্রতিযােগিতা শুরু হয়েছে। আরএসএস বিজেপির সঙ্গে প্রতিযােগিতায় নেমেছে তৃণমূল। আরএসএস বা বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও ফারাক নেই বলে কটাক্ষ করেন বিমানবাবু। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের বক্তব্য, আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এগােচ্ছি। ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শােনা যাচ্ছে। মানুষের যুক্তি, চিন্তাধারার ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। এমনকি মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই কঠিন সময়ে দক্ষিণপন্থী এই শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে জনসংযােগের মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে।

বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বিজেপিকে ঠেকাতে মানুষের জোট গড়ে তােলার ডাক দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, মানুষের জোট গড়ে উঠলে তার নেতৃত্ব দেবে বামপন্থীরা। এদিন জালিওয়ানবাগ হত্যাকাণ্ডের একশাে বছরেকে স্মরণ করে বিশেষ আলােচনাসভার আয়ােজন করা হয়েছিল। এই আলােচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ঐতিহাসিক অধ্যাপক চমনলাল।