• facebook
  • twitter
Thursday, 12 December, 2024

রাজ্যের বাকি হাসপাতালগুলিতে কবে থেকে চালু হবে ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’?

এই সিস্টেমের মাধ্যমে দুটি উদ্দেশ্য সফল করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এক, কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে সুবিধামতো বেড পাওয়া চিরতরে বন্ধ করা এবং দুই, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্নীতি মুক্ত করে উন্নতিসাধন করা।

এসএসকেএম হাসপাতাল।ফাইল চিত্র

আরজি কর কাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যেই সম্প্রতি রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে চালু হয়েছে ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’। তালিকায় রয়েছে আরজি কর সহ কলকাতার বেশ কয়েকটি নামকরা মেডিক্যাল কলেজ। শুক্রবার ১ নভেম্বর থেকে এই পাঁচটি হাসপাতালে এই ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালগুলিকে অনলাইনে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও বাকি রয়েছে রাজ্যের বহু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। সেই হাসপাতালগুলিতে কবে থেকে ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’ চালু হবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। জানা গিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যের আরও ২৩টি মেডিক্যাল কলেজে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। এইভাবে ধাপে ধাপে রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।

কিন্তু কী এই ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’? এর কার্যকারিতা কী? এই ব্যবস্থা চালুর ফলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে? স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, এই অনলাইন ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’ হল এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার আউটডোরে বসেই দেখে নিতে পারবেন, তাঁর বিভাগে কতগুলি বেড শূণ্য আছে। আবার জেলা বা ব্লক হাসপাতালগুলো অনলাইনে যুক্ত থাকার ফলে, সেখানকার ডাক্তাররাও বুঝতে পারবেন, কোন হাসপাতালে কতগুলো বেড খালি আছে। সেই মতো সুযোগ বুঝে এখানকার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সুবিধা মতো রেফার করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে জেলা ও ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তাঁরা অনলাইনে দেখে নেবেন কোন হাসপাতালে কোন রোগীকে সুবিধামতো পাঠানো যেতে পারে। সেখানকার কী পরিস্থিতি আছে! সেই অনুযায়ী তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, স্বরূপনগর ব্লক হাসপাতাল বা বারাসত জেলা সদর হাসপাতালের কোনও রোগীর প্যাংক্রিয়াস ছিদ্র হয়ে গিয়েছে, দ্রুত ওই রোগীর সার্জারি করতে হবে। এজন্য কলকাতার বড় কোনও হাসপাতালে পাঠাতে হবে। ধরে নেওয়া যাক, এসএসকেএম হাসপাতালে ওই রোগীর উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে। এমতাবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালেই পাঠানো হবে।

এই ব্যবস্থায় রোগীর হাতে একটি চিরকুট দেওয়া হবে। যেখানে এসএসকেএম হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বেড নম্বর লেখা থাকবে। এসএসকেএম-এ সংশ্লিষ্ট রোগীকে নিয়ে গেলে আর ভর্তির জন্য কোনও ঝামেলা পোহাতে হবে না। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেবেন। এবং চিকিৎসা বা অপারেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এভাবেই অনলাইন ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’ কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত এই সিস্টেমের মাধ্যমে দুটি উদ্দেশ্য সফল করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এক, কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে সুবিধামতো বেড পাওয়া চিরতরে বন্ধ করা এবং দুই, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্নীতি মুক্ত করে উন্নতিসাধন করা। গত অক্টোবরে রাজ্যে সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেমের পাইলট প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়েছিল। সোনারপুরের একটি রোগীকে এই রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চলতি মাস থেকে ৫ মেডিক্যাল কলেজে এই ব্যবস্থা চালু হলেও কোনও ডিসপ্লে বোর্ড বসানো হচ্ছে না। তবে নতুন বছরের আগেই সেই কাজ হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর।